দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীছাউনিটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। জমে আছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। পাশ দিয়ে গেলে চেপে ধরতে হয় নাক।
এ যাত্রীছাউনি সিলেট মহানগরীর প্রবেশমুখে হলেও এটির বেহাল দশা দেখার যেন কেউ ছিলো না। তবে গত বছর ওই যাত্রীছিউনি পরিদর্শন করে সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন- দ্রুত এটি সংস্কারের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি প্রদানের পর পেরিয়ে গেছে পুরো ১০ মাস। যাত্রীছাউনিটি পড়ে আছে আগের মতোই। বরং অবস্থা হয়েছে আরও বেহাল।
সিলেট মহানগরীর দক্ষিণ সুরমায় ‘দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ’র সামনেই ওই যাত্রীছাউনির অবস্থা। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে এটি পড়ে আছে অযত্ন-অবহেলায়। কলেজের শিক্ষার্থীরা কিংবা ক্লান্ত পথচারী- কেউ এখানে দুদণ্ড বসার সুযোগ নেই। পাকা ব্রেঞ্চগুলো ভাঙাচুরা, দেওয়াল রঙচটা, সর্বোপরি মেঝেতে ময়লা-আবর্জনা আর কাদামাটির স্তুপ। জমে থাকা পানিতে ভয়ঙ্কর ডেঙ্গু রোগের ভাইরাস বহনকারী এডিস মশার বংশ বিস্তারেরও সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।
এ অবস্থায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে ওই যাত্রীছাউনির ময়লার বাগাড়ের একটি ছবি সিলেটের একটি আঞ্চলিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। এটি নজরে আসে এমপি হাবিবের। তিনি ওই সময় পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থান করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে একটি লেখা পোস্ট করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, দেশে ফিরেই দক্ষিণ সুরমা কলেজের সামনের যাত্রীছাউনিটি পরিদর্শন করবেন এবং এটি সংস্কার করে শিক্ষার্থী এবং যাত্রীসাধারণকে বসার উপযোগী করে দেবেন।
এমপি হাবিব দেশে ফিরে গত বছরের ৬ অক্টোবর বিকেলে সেই যাত্রীছাউনি পরিদর্শনও করেন। পরিদর্শনকালে তিনি এ বিষয়ে সিলেট জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করেন। জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ একমাসের মধ্যে যাত্রীছাউনিটি সংস্কারের আশ্বাস প্রদান করেছে বলে এসময় এমপি হাবিব জানান।
ওই দিন এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, দক্ষিণ সুরমা কলেজের সামনের যাত্রীছাউনিটি পরিদর্শন করেছি এবং এটি সংস্কারের ব্যাপারে সিলেট জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপও করেছি। কর্তৃপক্ষ একমাসের মধ্যে যাত্রী ছাউনিটি সংস্কারের আশ্বাস প্রদান করেছেন। যদি জেলা পরিষদ না করে তবে সেটি আমি আমার নিজস্ব অর্থায়নে করে দেবো ইনশা আল্লাহ।
ওই দিন এমপি হাবিব আরও বলেন, আমার এলাকার যে কোনো সমস্যা নজরে আসলেই দ্রুত তা সমাধানের চেষ্টা করবো।
কিন্তু ওই দিনের পর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ১০ মাস, আগের অবস্থায়ই পড়ে আছে গুরুত্বপূর্ণ স্থানের এই যাত্রীছাউনি।
দক্ষিণ সুরমা কলেজের সামনের যাত্রীছাউনি সংস্কারের বিষয়ে সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহ বলেন- শুধু এটি নয়, পুরো জেলার বেশ কয়েকটি যাত্রীছাউনি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ সুরমা কলেজের সামনের যাত্রীছাউনিও রয়েছে। ইতোমধ্যে বরাদ্দ এসে গেছে, টেন্ডারও হয়ে গেছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দক্ষিণ সুরমা কলেজের সামনের যাত্রীছাউনিটি সংস্কার করা হবে।
এ বিষয়ে আজ সোমবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব-বলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান না থাকায় এই যাত্রীছাউনি সংস্কারে বিলম্ব হচ্ছে। তবে আশা করছি অক্টোবর নাগাদ কাজ শরু হবে। তবুও আগামীকাল (মঙ্গলবার) এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সঙ্গে আবার কথা বলবো।
শেয়ার করুন