এমবাপ্পে-হল্যান্ডের জোড়া গোলে জয় পেয়েছে পিএসজি ও সিটি

খেলাধুলা

নিজেদের ঘরের মাঠ পার্ক দেস প্রিন্সেসে মঙ্গলবার রাতে ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচে কিলিয়ান এমবাপ্পের কল্যাণে শুরুর দিকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় পিএসজি। প্রথমার্ধে কোণঠাসা জুভেন্টাস বিরতির পর দারুণ লড়াই করে ব্যবধান কমালেও তারকাসমৃদ্ধ পিএসজিকে আটকাতে পারেনি।

ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। বক্সের বাহিরে থেকে জুভেন্টাসের দুই ডিফেন্ডারের মাথার উপর দিয়ে দারুণভাবে চিপ করে ডি-বক্সে পাস বাড়ান নেইমার। আর প্রথম ছোঁয়ায় কোনাকুনি শটে জুভেন্টাস গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এমবাপ্পে।

১৯তম মিনিটে সমতায় ফিরতে পারতো জুভেন্টাস। গোলরক্ষক ডোন্নারুম্মার কল্যাণে এই যাত্রায় গোল হজম করা থেকে বেঁচে যায় পিএসজি। ডান দিক থেকে হুয়ান কুয়াদরাদোর ক্রসে আর্কাদিউস মিলিকের জোরাল হেড দারুণ ক্ষীপ্রতায় ঠেকিয়ে দেন পিএসজি গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা। তারপরও সুযোগ ছিল। কিন্তু দুসান ভ্লাহোভিচের কোনাকুনি শট ব্যাক-ফ্লিকে ঠেকান সার্জিও রামোস, তৃতীয়বারের প্রচেষ্টায় লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন ফিলিপ কসতিচ।

এর তিন মিনিট পরেই ব্যবধান দ্বিগুন করেন এমবাপ্পে। আশরাফ হাকিমির সাথে ওয়ান টু পাস খেলে ডি বক্সের ভিতর বল পেয়েই প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠান ফরাসি ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে প্যারিসের ক্লাবটি।

দ্বিতীয়ার্ধে ৫৩তম মিনিটে ব্যবধান কমিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। সতীর্থের ছোট করে নেওয়া কর্নারে সার্ব মিডফিল্ডার কসতিচ ক্রস বাড়ান বক্সে। লাফিয়ে উঠে হেডে ঠিকানা খুঁজে নেন যুক্তরাষ্ট্রের মিডফিল্ডার ম্যাককেনি।

এরপর দু’দল মোটামুটি অনেক গুলো সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি। তাই ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গালতিয়ারের শিষ্যরা।

এদিকে মুড়ি মুড়কির মতন গোল করে চলেছেন আর্লিং হল্যান্ড। গোল করা যেন তার কাছে ডাল-ভাতের মতো সহজ কাজ। নতুন ক্লাব, নতুন মৌসুম কিন্তু সেই পুরোনো হল্যান্ড, আরেকবার গোল করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগকে স্বাগত জানালেন মনস্টার হল্যান্ড। তার জোড়া গোলে সেভিয়াকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে সিটি।

সেভিয়ার মাঠে মঙ্গলবার রাতে ‘জি’ গ্রুপের ম্যাচে সেভিয়াকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করল ম্যানচেস্টার সিটি। জোড়া গোল করেছেন আর্লিং হল্যান্ড। অন্য দুটি গোল এসেছে ফিল ফোডেন ও রুবেন দিয়াসের পা থেকে।

শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। একের পর এক আক্রমনে দিশেহারা হয়ে যায় সেভিয়া। ২০তম মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার এসিস্ট থেকে গোল করে ম্যানচেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে এগিয়ে নোন হল্যান্ড। প্রথমার্ধ আর কোনো গোল না হওয়ায় ১-০-তে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় সফরকারীরা।

দ্বিতীয়ার্ধে তিনটি গোল করে সিটি। ৫৮তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফিল ফোডেন। এরপর ৬৭তম মিনিটে ফিল ফোডেন এর শট প্রথমে ঠেকিয়ে দেন সেভিয়া গোলরক্ষক। কিন্তু পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি একটু দৌড়ে এসে সেভিয়ার জালে বল পাঠান হল্যান্ড। নিজের দ্বিতীয় গোলের পাশাপাশি সিটিকে এগিয়ে নেন ৩-০-এ।

এরপর যোগ করা সময়ে দলের চতুর্থ গোলটি করেন রুবেন দিয়াস। ডান দিক থেকে কেনসেলোর বক্সে বাড়ানো পাস ফাঁকায় পেয়ে জালে ঠেলে দেন এই পর্তুগিজ ডিফেন্ডার। ৪-০ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পেপ গার্দিওয়ালার শিষ্যরা।

দিনের আরেক ম্যাচে সেল্টিককে উড়িয়ে শুভসূচনা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা ধরে রাখার অভিযান সেল্টিককে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে শুরু করল কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল মাদ্রিদ। গোল করেছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, লুকা মডরিচ ও এডেন হ্যাজার্ড।

গ্লাসগোর সেল্টিক পার্কে মঙ্গলবার রাতে ‘এফ’ গ্রুপে সেল্টিক-রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচে প্রথমার্ধে কোনো গোল হয়নি, ০-০ সমতায় প্রথমার্ধ শেষ করে দু’দল।

৫৬তম মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এর দারুণ ফিনিশিং প্রথম লিড পায় রিয়াল মাদ্রিদ। গোলের যোগানদাতা ছিলেন ফেডেরিকো ভালভার্দে।

মিনিট চারেক পর ব্যবধান দ্বিগুন করেন লুকা মডরিচ। গোলের উৎস এডেন হ্যাজার্ড। ৭৭তম মিনিটে কারভাহালের পাস থেকে এডেন হ্যাজার্ডের গোলে ৩-০ তে এগিয়ে যায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এরপর আর ব্যবধান বাড়াতে পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। তাই ৩-০ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আনচেলত্তির শিষ্যরা।

তবে জয়ের আনন্দের মাঝে কোচ আনচেলত্তির জন্য অস্বস্তির কাঁটা হয়ে এসেছে করিম বেনজেমার চোট। প্রথমার্ধেই মাঠ ছেড়ে যান ফরাসি ফরোয়ার্ড।

গ্রুপের আরেক ম্যাচে বুন্দেসলিগার দল আরবি লাইপজিগকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে ইউক্রেইনের ক্লাব শাখতার দোনেৎ।

দিনের অন্য ম্যাচে ইসরাইলের ক্লাব মাক্কাবি হাইফার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয় পেয়েছে পর্তগিজ ক্লাব বেনফিকা আর অস্ট্রিয়ান ক্লাব সালজবুর্গের সাথে ১-১ ড্র করেছে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন এসি মিলান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *