এলপিএল: ডাম্বুলাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ক্যান্ডি

গ্রামবাংলা

রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে ডাম্বুলা অরাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) চ্যাম্পিয়ন হলো বি লাভ ক্যান্ডি। এলিমিনেটর ও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জিতে ফাইনালে আসা ক্যান্ডিই শেষ পর্যন্ত জিতল ট্রফি। এলপিএল পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন। প্রথম তিন আসরে শিরোপা জিতেছিল জাফনা ফ্র্যাঞ্চাইজি।

কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে রবিবার (২০ আগস্ট) শিরোপা লড়াইয়ে ডাম্বুলা করতে পারে ১৪৭ রান। এলপিএলের চার আসর মিলিয়ে ফাইনালে আগে ব্যাটিং করে সর্বনিম্ন স্কোর এটিই।

জবাবে ১ উইকেটে ৯৪ রানের শক্ত অবস্থানে থেকেও দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে পথ হারাতে বসেছিল ক্যান্ডি। তবে আসিফ আলির ১০ বলে ১৯ রানের ক্যামিও এবং ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ম্যাথিউসের ২১ বলে অপরাজিত ২৫ রানের ইনিংসে ১ বল বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় দলটি।

 

প্লে অফে আগের দুই ম্যাচে জয়ের নায়ক ও ক্যান্ডির নিয়মিত অধিনায়ক হাসারাঙ্গা ফাইনালে খেলতে পারেননি হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে। তবু আসরের সর্বোচ্চ স্কোরার ও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এই লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার।

১০ ম্যাচের ৯ ইনিংসে ব্যাটিং করে ১৮৯.৭৯ স্ট্রাইক রেটে হাসারাঙ্গা করেন ২৭৯ রান। সবচেয়ে বেশি ১৪টি ছক্কা মারেন তিনিই। হাত ঘুরিয়ে ১০ ইনিংসে ওভারপ্রতি ৫.৫১ করে রান দিয়ে তার প্রাপ্তি ১৯ উইকেট। এলিমিনেটর ম্যাচে ৯ রান দিয়ে নেন ৬ উইকেট। আসরে ১৫ উইকেটও নেই আর কারও। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ উইকেট নিতে পেরেছেন হাসারাঙ্গারই সতীর্থ পেসার নুয়ান প্রাদিপ।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই আভিশকা ফার্নান্দোকে হারায় ডাম্বুলা। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৭ বলে ৫৭ রানের জুটিতে দলকে টানেন কুসাল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাউইক্রামা। তবে চাতুরাঙ্গা ডি সিলভার একই ওভারে দুই থিতু ব্যাটসম্যান আউট হয়ে গেলে কমে যায় রানের গতিও। অধিনায়ক মেন্ডিস ২৩ বলে ২২ ও সামারাবিক্রমা ৩০ বলে করেন ৩৬ রান। মাঝে ৩৫ বলে আসেনি কোনো বাউন্ডারি। মোহাম্মদ হাসনাইনকে টানা দুই ছক্কায় সেই খরা কাটান ধানাঞ্জায়া ডি সিলভা। চতুর্থ উইকেটে কুসাল পেরেরার সঙ্গে তিনি গড়েন ৪৬ বলে ৬৩ রানের ইনিংস সেরা জুটি। ৩ ছক্কায় ২৯ বলে ৪০ রান করে আউট হন ধানাঞ্জায়া। পেরেরা অপরাজিত রয়ে যান ২৫ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ৩১ রান করে।

রান তাড়ায় পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান তুলে ফেলেন ক্যান্ডির দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হারিস ও কামিন্দু মেন্ডিস। পরের ওভারে হারিসের (২২ বলে ২৬) বিদায়ে ভাঙে ৪৯ রানের শুরুর জুটি। একটা পর্যায়ে ৯ উইকেট হাতে রেখে ক্যান্ডির প্রয়োজন ছিল ৪৫ বলে ৫৪ রান। এরপরই ২১ বলের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় তারা। মেন্ডিস ৩৭ বলে করেন ৪৪ রান, দিনেশ চান্দিমাল ২২ বলে ২৪, চাতুরাঙ্গা খুলতে পারেননি রানের খাতা। শেষ চার ওভারে দরকার ছিল ৩৭ রান। আসিফের ২ চার ও এক ছক্কায় ১০ বলে ১৯ রানের ছোট্ট ঝড়ো ইনিংসে কমে আসে ব্যবধান। শেষের আগের ওভারে চতুর্থ ও পঞ্চম বলে চার মেরে শেষ ওভারে সমীকরণ ৬ রানে নামিয়ে আনেন ম্যাথিউস। সেখানে প্রথম চার বলে আসে ৫ রান। এরপর মাদুশানকার ওই বাউন্ডারি এবং ক্যান্ডির শিরোপা জয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ডাম্বুলা অরা: ২০ ওভারে ১৪৭/৪ (আভিশকা ৫, কুসাল মেন্ডিস ২২, সামারাউইক্রামা ৩৬, কুসাল পেরেরা ৩১*, ধনাঞ্জয়া ৪০, রস ২*, ম্যাথিউস ২-০-১১-০, মুজিব ৪-০-২৪-০, প্রদিপ ৪-০-৩০-১, চাতুরাঙ্গা ৪-০-২৫-২, হাসনাইন ৪-০-৩৮-১, কামিন্দু মেন্ডিস ২-০-১৬-০)

বি লাভ ক্যান্ডি: ১৯.৫ ওভারে ১৫১/৫ (হারিস ২৬, কামিন্দু মেন্ডিস ৪৪, চান্দিমাল ২৪, ম্যাথিউস ২৫*, চাতুরাঙ্গা ০, আসিফ ১৯, মাদুশঙ্কা ৫*; বিনুরা ৪-০-৩১-২, ধানাঞ্জায়া ৩-০-১৬-০, মাদুশান ২.৫-০-৩০-০, হেইডেন ৩-০-৩০-০, নুর ৪-০-২৭-৩, হেমান্থ ৩-০-২১-০)

ফল: বি লাভ ক্যান্ডি ৫ উইকেটে জিতে চ্যাম্পিয়ন

ম্যান অব দা ম্যাচ: অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস

ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট: ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *