ওবায়দুল কাদেরের বয়ানে চাঞ্চল্যকর কিছু দিক!

মুক্তমত

ইকবাল মাহমুদ

ভারতীয় মিডিয়ায় ওবায়দুল কাদেরের অডিও সাক্ষাৎকারটি শুনলাম। কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক ভাবনার খোরাক জোগায়।
এক- ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সময় হাতের কাছে পেয়েও বিপ্লবীরা তাকে আঘাত না করে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। কাদেরের নিজের মুখে এই বয়ানই প্রমাণ করে বিপ্লবটি কত অহিংস, মানবিক আর শান্তিপূর্ণ ছিলো।
হাসিনার পরেই সবচেয়ে বড় ফ্যাসিস্ট ছিলো ওবায়দুল কাদের। অনেকের মতো আমারও ধারনা ছিলো সেদিন কাদেরকে হাতের কাছে পেলে বিপ্লবীরা জ্যান্ত পুতে ফেলতো! কিন্তু বাস্তবতা হলো তারা তাকে একটি ফুলের টুকাও দেয়নি।
বরং ট্যাক্সিতে করে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে রক্ষা করতে কাদের দম্পতিকে অসুস্থ চাচা-চাচী পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সরিয়ে নিয়েছে।
৫ আগস্ট বিপ্লবকে হাসিনা ও তার দোসররা যেসব হত্যা, লুটপাট ও নাশকতার কালিমা দিয়ে কলঙ্কিত করতে চায় ওবায়দুল কাদেরের এই নিরাপদে বেঁচে যাওয়ার ঘটনা তার অসারতা প্রমানের জন্য যথেষ্ট। তবে এই কুলাঙ্গার বেঁচে গিয়েও যে মানুষ হয়নি তা তার বক্তব্যজুড়ে প্রমাণ দিয়ে গেছে। সেই উত্তাল অগ্নি স্ফুলিঙ্গের সময় যারা তাকে নিরাপদে বাঁচিয়ে দিয়েছে তাদের প্রতি একটিবারও সে ধন্যবাদ বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেনি। বরং বিপ্লবটাকে সন্ত্রাস ও লুটপাটের কালিমায় কলঙ্কিত করে গেছে অবলীলায়।
দুই- ওবায়দুল কাদের বলেছেন তিনি বিপ্লবের পরেও ৩ মাস দেশে ছিলেন। এটি আরো ভয়ংকর। তিনি কোথায়, কার হেফাজতে ছিলেন? এটি বের করা দরকার। সিলেটের এক শিল্পপতির বাড়িতে তার অবস্থানের খবর কোন কোন মিডিয়ায় প্রচার হয়েছিলো।
এটি যদি সঠিক হয় তাহলে ওই শিল্পপতিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার। কেননা, ওই সময় তিনি শুধু জীবন বাঁচানোর জন্য আত্মগোপনে ছিলেন না, বরং তিনি দাবী করেছেন দেশে থেকে কিছু করার চেষ্ঠা তিনি করে গেছেন।
এমনকি ওই সময় গার্মেন্ট শ্রমিকসহ বিভিন্ন গোষ্টির তথা কথিত আন্দোলনে ইন্দন যুগিয়েছেন। এ লম্বা সময় ধরে তার অবস্থান না জানা এবং এরপর সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নিরাপদে ভারতে চলে যেতে দেয়ার ঘটনা দেশের গোয়েন্দা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য কলঙ্ক হয়ে থাকবে।
তিন- ওবায়দুল কাদের বলেছেন তারা ক্ষমা চাইবেন, তবে বিদেশে থেকে নয়। দেশে ফিরে প্রয়োজনে ক্ষমা চাইবেন তারা। আমার মনে হয় সে সুযোগ এখনই তারা নিতে পারেন। যদি সত্যিকারভাবে তারা উপলব্ধি করেন তাহলে এখনই দেশে ফিরে ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে পারেন।
আদালত ও দেশের মানুষের কাছে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে পারেন। বিপ্লবের উত্তাল দিনেও যারা তাকে ভ্যানগার্ড হয়ে নিরাপদ রেখেছে তারা ৯ মাস পর তাদেরকে ক্ষমা করেও দিতে পারে
শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *