ওসমানী হাসপাতালে পানি ঢুকে চরম দুর্ভোগ

সিলেট

অতিবৃষ্টিতে সোমবার ভোরের দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিচতলা তলিয়ে যায়। এতে চরম দুর্গোগে পড়েন হাসপাতালের রোগী, চিকিৎসকসহ সংশ্লিস্টরা। ব্যাহত হয় সেবা কার্যক্রম।

এদিকে, পানি ঢুকে পড়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজেরও নীচতলায়। ফলে কলেজের সোমবারের সব পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে।

জানা যায়, রোববার মধ্যরাত থেকে সিলেটে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়। ভোরের দিকে ওসমানী হাসপাতাল ও কলেজের নীচতলায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করছে। পানি ঢুকে পরায় সকালে ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে পানি ঢুকায় ২ শতাধিক রোগীকে স্থানান্তর করা হয়। এছাড়া বন্ধ হয়ে পড়ে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা কার্যক্রম। ফলে বিঘ্নিত হয় চিকিৎসা সেবা। সকালে হাসপাতাল চত্তরের কোথাও হাঁটু পানি, কোথাওবা কোমর সমান পানি জমে যায়। কর্মকতূাদের কক্ষেও পানি ঢুকে পড়ে। তবে বিকেলে এ রিপোর্ট লেখার সময় হাসপাতলে চত্বর থেকে পানি নেমে গেছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে সেবা কার্যক্রম।

সংশ্লিস্টরা জানান,  হাসপাতালের নিচতলা ও রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে ভোর থেকে পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে ঘুমন্ত রোগী ও স্বজনরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফ্লোর, বারান্দা ও প্রবেশপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন রোগী ও তাদের স্বজনরা। তাই কর্তৃপক্ষ জরুরী ভিত্তিতে তাদের অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তর করেন।

এছাড়া রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রসহ প্যাথলজি বিভাগে পানি প্রবেশ করায় এর কার্যক্রম সকালে বন্ধ ছিলো বলে জানিয়েছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী। তিনি জানান, বানের পানি প্রবেশ করাই চিকিৎসাসেবা কিছুসময় ব্যাহত হয়। ২ শতাধিক রোগীকে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া রক্ত সঞ্চালন বিভাগ এবং প্যাথলজি বিভাগে পানি প্রবেশ করায় এখনকার কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। পানি নামার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা সেবা দ্রুত স্বাভাবিক করে।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়া জানিয়েছেন, প্রধান ফটকসহ আশপাশের এলাকা জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় নিচতলার বিভিন্ন স্থানে পানি উঠে যায়। এতে ২৬, ২৭ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের রোগীদের সেবা ব্যাহত হয়।

আর কলেজে পানির কারণে তিনটি ক্লাস-পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সরকারি আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হুসাইন জানান, রোববার সকাল থেক সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে ২২৬.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া সোমবার ভোর ছয়টা থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সোমবার দুপুর ১২টার তথ্যমতে, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি রোববার কমলেও সোমবার বেড়েছে। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অপরদিকে, কুশিয়ারার অমলসিদ পয়েন্টে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় নদীর তীর উপচে পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। শহরের পাশাপাশি আজ সিলেটের বিভিন্ন এলাকায়ও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার অনেক উপজেলায় পানি কমে বিভিন্ন সড়কে যোগাযোগ শুরু হলেও সোমবার সকাল থেকে আবার বন্ধ হয়ে যায়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *