কক্সবাজারের উদ্দেশে ছুটল প্রথম ট্রেন

জাতীয়

নির্মাণ কাজ পরিদর্শন ও কোনো ত্রুটি রয়েছে কি না যাচাই করতে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাচ্ছে একটি ট্রেন। রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ৯টায় ৮টি বগি ও একটি ইঞ্জিন নিয়ে ট্রেনটি চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়ে। এতে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে এবং রেল পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা রয়েছেন।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, এটি কোনো ট্রায়াল ট্রেন না। নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হলে সেটি যাচাই-বাছাই করতে হয়। এটি তারই অংশ। এখানে রেলের পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা যাচাই-বাছাই করে সবকিছু ঠিকঠাক আছে জানালে যথাসময়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

সরকারি রেল পরিদর্শক রুহুল কাদের আজাদ বলেন, রেলের পরিদর্শন দপ্তরের টিম নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন ও বিভিন্ন স্টেশন পরিদর্শন করে কোনো ত্রুটি আছে কি না যাচাই করা হবে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালানোর জন্য প্রধান বাঁধা ছিল পুরনো কালুরঘাট সেতু। পরে বুয়েটের পরামর্শে সেটি সংস্কার করে ভারী ট্রেন চালানোর উপযোগী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ১ আগস্ট থেকে সেতুটির সংস্কার কাজ শুরু হয়। বর্তমানে কাজ শেষ পর্যায়ে এসে এখন সেতু দিয়ে ১৫ এক্সেল লোডের ইঞ্জিন চলাচল করতে পারে। শনিবার (৪ নভেম্বর) তিনটি ভিন্ন সিরিজের ইঞ্জিন দিয়ে এ সেতুতে ট্রায়াল রান সম্পন্ন করা হয়। ইঞ্জিন তিনটি শহর থেকে বোয়ালখালী অংশে যাতায়াত করে। এতে প্রাথমিকভাবে কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, ৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রায়াল ট্রেন চালানোর কথা ছিল। তবে পরে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে রেলওয়ে। একেবারে আগামী ১১ নভেম্বর এই রেলপথ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের কথা রয়েছে।

এর আগে গত ১৬ অক্টোবর দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন পরিদর্শন করেছিলেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম। মন্ত্রী ওই দিন একটি ট্রলি দিয়ে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার গিয়েছিলেন। তখন তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন রেললাইনের উদ্বোধন করবেন। এরপর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, উদ্বোধন অনুষ্ঠান একদিন এগিয়ে ১১ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৮ সালে এই রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। পরে এক দফা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। এ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলায় নির্ধারিত সময়ের আগেই তা সমাপ্ত হতে যাচ্ছে। ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *