কথা বললে মামলা ও রিমান্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কথা বলে কী লাভ? এসব অভিযোগ করেছেন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
সোমবার (১০ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় পলককে দুপুর ১২টার পর কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সেখান থেকে দুপুর পৌনে ২টার দিকে প্রিজন ভ্যানে তাকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়।
প্রিজন ভ্যানে থাকা অবস্থায় লোহার জানালার কাছে গিয়ে হাতের ইশারায় হাসিমুখে সালাম দেন পলক। এরপর উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, কথা বললে মামলা ও রিমান্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কথা বলে কী লাভ? আমার জন্য দোয়া করবেন।
কিছুক্ষণ পরে প্রিজন ভ্যানের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য ওঠে পলককে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরিয়ে দেন। এরপর তাকে পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে মহানগর দায়রা আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়। হাজতখানায় নেওয়ার পথে পলক আবারও বলেন, কথা বললে মামলা ও রিমান্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পেছনে হ্যান্ডকাপও দেওয়া হয়। কথা বলার অধিকার কি আমাদের আছে? এখনও পর্যন্ত তাকে ৭৮টি মামলার আসামি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পলকের আইনজীবী ফারজানা ইসলাম রাখি জানান, সোমবার দুদকের মামলায় পলকের হাজিরার জন্য দিন ধার্য ছিল। এজন্য তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালত আনা হয়েছে।
পলক কোনও ডিভিশন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করে এই আইনজীবী বলেন, কাশিমপুর কারাগারের চার নম্বর সেলে তাকে হাই সিকিউরিটির মধ্যে রাখা হয়েছে। তাকে কোনও ধরনের ডিভিশন দেওয়া হচ্ছে না। তার ফ্যামিলির সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্তও করতে দেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ কয়েদিদের মতো করে তাকে রাখা হচ্ছে। দেশের খবর জানার জন্য অখ্যাত ৪টি পত্রিকা তাকে দেওয়া হয়। জাতীয় কোনও পত্রিকা দেওয়া হচ্ছে না। মূলত সেখানে ডিভিশনের ব্যবস্থা নেই বলে জানান তিনি।
এর আগে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর জুনাইদ আহমেদ এবং তার স্ত্রী আরিফা জেসমিনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। মামলার তথ্য অনুযায়ী, জুনায়য়েদ আহমেদ পলকের ২৪টি ব্যাংক হিসাবে ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা তুলে নেওয়া হয়। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই টাকা লেনদেন হয়েছে।
২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট পলককে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে বিভিন্ন সময় হত্যা, হত্যাচেষ্টা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
শেয়ার করুন