কলকাতায় এখন হাসির খোরাক আওয়ামী লীগ

বিশ্ব

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে বাংলাদেশ নিয়ে একটি আলোচনা সভায় শেখ হাসিনার সমালোচনা করলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক অর্ক দেব। তিনি দিনকয়েক আগে ড. ইউনূসের সঙ্গে আয়নাঘর পরিদর্শনে হাজির ছিলেন বাংলাদেশে। মোদি, হাসিনা, আদানি কীভাবে এশিয়াকে চুষে খাওয়ার ছক করেছিলেন, তা উঠে আসে এই অনুষ্ঠানে। এর আয়োজক ছিল করপোরেটবিরোধী চর্চা ‘জ্ঞানগঞ্জ’।

সাংবাদিক অর্ক দেব আদানি-মোদি-হাসিনার ত্রিকোণ বন্ধুতার আখ্যান তুলে ধরেন। শেখ হাসিনার সঙ্গে আদানি চুক্তির নেপথ্যে যে মোদি সরকার, তা স্পষ্ট হয়ে যায় তার বক্তব্যে। এখানে ভারতীয় করপোরেট স্বার্থরক্ষা হয়েছে।

কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের একাংশ এখনো বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের সমর্থনে অবিচল রয়েছেন। অবশ্য বেশ কিছু মিডিয়া ও সংগঠন লাগাতার বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লিগের বড় নেতারা এখন নেই। তারা অনেকেই কলকাতা, দিল্লিতে রয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে অর্ক জানান, আগামী দিনে টালিগঞ্জ আওয়ামী লীগ, নদিয়া জেলা আওয়ামী লীগ, সিপিএম সমর্থিত আওয়ামী লীগ, বিজেপি আশ্রিত আওয়ামী লীগ, বজরং আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ আদিত্যনাথ শাখা, তৃণমূল অনুকম্পাপ্রার্থী আওয়ামী ক্লাব দেখতে হবে। এটাই আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব রক্ষার পথ, অসীমের সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে নেওয়া। বাংলাদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগের জায়গা নেই।

এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এটা সবচেয়ে ভালো বোঝা যায় রিকশাওয়ালা অটোচালকের সঙ্গে কথা বললে। রিকশাওয়ালারা আপনাকে বলবে, মামা আর আর ভয় নাই। তার মানে ভয় ছিল। কীসের ভয়? মারের ভয়, উল্টো কথা বললেই মারের ভয়। সমাজের সব স্তরে মারের ভয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানে মারের ভয় থেকে মুক্তি। সাময়িক হয়তো, কিন্তু এরা আনন্দে বাঁচছে প্রথমবার, ঢাকার রাস্তায় শৌচালয় নেই। রিকশাওয়ালারা জানে আওয়ামী অফিসের নিচতলা আছে।

তিনি বলেন, তারপরও কি সংকট নেই? আছে। অনেক সংকট আছে। হেফাজতে মৃত্যু, গণপিটুনি, ম্যুরাল ভাঙা, কৃষকমূর্তি ভাঙা-অক্ষমতা। এ কথা কাউকে আড়াল করতে বলা নয়। বলা, সব শুভ শক্তিকে একত্রিত হওয়ার আবেদন জানাতে। রাষ্ট্রকে যেমন দায় নিতে হবে, তেমন সব প্রান্তিককে বাঁচাতে জোট বাঁধতে হবে আমাকেই। অন্যায় শুধু বাংলাদেশে দেখলে আমি মায়োপিক, আমি ইসলামোফোব, আওয়ামী খুদ কুড়ো ভিক্ষার্থী, চোখে আওয়ামী লেন্স।

অর্কের অভিযোগ, এর দায় যাদের, তারা রক্তের দাগ ধুয়ে ফেলে দিল্লিতে, কলকাতার নিউটাউনের হোটেলে বিশ্রাম নিচ্ছে। অথবা মোদিকে সওগাত জানাচ্ছে ইউএসে। এতটুকুও অনুতাপ তাদের নেই। আছে ট্রলের সময় আর অফুরান এনার্জি।

শুধু অর্ক নয়, কলকাতার অনেক বুদ্ধিজীবীই এখন হাসিনার আয়নাঘরের সমালোচনা করছেন। তবে মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় তাদের প্রচার কম হচ্ছে। বিজেপি নিজেদের জমি শক্ত করতে লাগাতার বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হামলার গল্প শোনাচ্ছে। তবে এরই মধ্যে যাদবপুরের মতো জায়গায় বাংলাদেশে স্বৈরাচারী হাসিনা শাসনের কথা আলোচিত হচ্ছে। আওয়ামী লিগ হয়ে উঠেছে হাসির খোরাক।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *