কাঁদা জল মাড়িয়ে ছুটে চলছেন দুরন্ত এক মানুষ ডাঃ শফিক

সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: গ্রাম থেকে গ্রামে। হাওর থেকে হাওরে। কাদা জল মাড়িয়ে ছুটে চলছেন দুরন্ত এক মানুষ। তিনি হলেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান। তিনি বানভাসি মানুষের মুখে তুলে দিয়েছেন খাবার। পরনে যাদের কাপড় নেই তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন নতুন কাপড়। একমুঠো খাবারের অপেক্ষায় সেই বানভাসির সাথে তিনি ঈদ উদযাপন করতে ছুটে এসেছেন সুনামগঞ্জে। পরিবার পরিজন রেখে ক্ষুধার্ত, বিধ্বস্ত ঘরের লোকজনের মুখে হাসি ফুটাতে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দলবল নিয়ে। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের অন্যতম নেতাদের মধ্যে তিনি একজন। প্রধান সারির কোন নেতাকে বানভাসির পাশে এসে ঈদ করতে দেখা যায়নি। তিনি সুনামগঞ্জ শহরের মোহাম্মদপুর এলাকায় বানভাসিদের সাথে ঈদের জামায়াত আদায় করেন। পরে তাহিরপুরের বড়দল গ্রামে, বিশ্বম্ভরপুরের ধনপুর গ্রামে, জামালগঞ্জের সুখদেবপুর ও রামনগর বাজারে দুর্গত মানুষের সাথে কথা বলেন। এভাবেই তিনি হাওর থেকে হাওরে ঘুরেছেন এবং তাদের ঘুরে দাঁড়াতে যতটুকু প্রয়োজন সবটুকু দিয়ে পাশে থাকার প্রতিশ্রতিও ব্যক্ত করেন।

গত ১৬ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত বন্যার পানির সাথে লড়াই করে বেঁচে আছে সুনামগঞ্জবাসী। তাদের আর্তনাদ শুনে আমীরে জামায়াত কয়েক কোটি টাকার খাদ্যসামগ্রী নিয়ে বানভাসিদের পাশে দাঁড়ান। প্রতিটি গ্রামে তালিকা করে ঈদের আগেই বাড়ি বাড়ি দুর্গতদের জন্য উপহার পাঠিয়ে দেন। বানভাসিদের পুনর্বাসনের জন্য জামায়াত ইতিমধ্যে ৫ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে। সেই টাকা যাচাই বাছাই করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে

সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর তোফায়েল আহমদ খান জানান, বন্যার শুরু থেকেই ডা: শফিকের নির্দেশে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমরা বাড়ি বাড়ি উপহার সামগ্রী পাঠিয়েছি। পুনর্বাসনের জন্য তালিকা তৈরী হচ্ছে। বন্যার পানিতে ৩৬ জন মারা গেছেন। তাদের পরিবারকে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি। এ ধারা আমাদের অব্যাহত থাকবে। আমীরে জামায়াত ডা: শফিক মানুষের কষ্ট বুঝেন। তাই তিনি পরিবার ছেড়ে সুনামগঞ্জ এসেছেন বন্যার্তদের সাথে ঈদ করতে। আমীরে জামায়াতের এমন চিন্তা চেতনা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি মাইলফলক।

ডা: শফিক বলেন, জামায়াত একটি গণমুখী সংগঠন। যেখানে দুর্যোগ সেখানেই জামায়াতের নেতাকর্মীরা পাশে থাকবে। আমি একজন শহীদ পরিবারের সন্তান। আমি মানুষের কল্যাণের রাজনীতি করি। মানুষের সেবা দেয়াই আমাদের কাজ। আমার পরিবার পরিজন রেখে বানভাসিদের সাথে ঈদ করেছি। বানভাসিরা যদি ঈদ আনন্দ না করতে পারে পরিবার নিয়ে ঈদ আনন্দ করার মানে আমার কাছে নাই। আজীবন মানুষের সুখ দু:খে পাশে থাকার জন্য সবার কাছে দোয়া চান তিনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *