কাজে যোগ দেননি চা শ্রমিকরা, আন্দোলন ‘চলবে’

জাতীয়

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দেননি। তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

১২০ টাকা থেকে মজুরি বৃদ্ধি করে ৩০০ টাকা করার দাবিতে চা শ্রমিকরা গত ৮ আগস্ট থেকে কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন। এরপর ১৩ আগস্ট থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে রয়েছেন।

চা শ্রমিকদের আন্দোলন স্থিমিত করতে কয়েক দফায় বৈঠকও হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল শনিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম দফতরের অফিসে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস‍্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে শ্রমিকদের মজুরি ১৪৫ টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসিনার আশ্বাসে সরকারের এই প্রস্তাব শ্রমিকরা মেনে নিয়েছেন।

কিন্তু এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন চা শ্রমিকরা। তারা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। শ্রমিকদের চাপের মুখে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিতে বাধ্য হন নৃপেন পাল।

গতকাল সন্ধ্যার পর তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান জানাই। ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর বিভিন্ন চা-বাগান থেকে পঞ্চায়েত কমিটি ও ভ্যালি কমিটির নেতারা আমাদের ফোন দিয়ে জানান, ১৪৫ টাকা মজুরি মেনে নেবেন না জানিয়ে শ্রমিকেরা বাগানে বাগানে আন্দোলন শুরু করেছেন। শ্রমিকেরা বৈঠকের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তাই আমরা শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।’

এদিকে, শনিবার রাতে সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবুর রহমানের সাথে বৈঠকে বসেন সিলেট ভ্যালির চা শ্রমিক নেতারা। বৈঠকে রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে  বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ‘আমাদের মজুরি মাত্র ২৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে আমরা কেউই সন্তুষ্ট না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যেহেতু আশ্বাস দিয়েছেন, ভারত থেকে ফিরে আগামী মাসে আমাদের সাথে বসবেন, আমাদের দাবিদাওয়া শুনবেন, তাই আমরা তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে ধর্মঘট আপাতত স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, প্রধানমন্ত্র্রী আমাদের দাবিদাওয়া শুনে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের উদ্যোগ নেবেন।

রাজু গোয়ালা এও বলেন, ‘সারাদেশের কথা জানি না, তবে আমাদের সিলেট ভ্যালির ২৩ বাগানের শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত করতে সম্মত হয়েছি। রোববার থেকে শ্রমিকরা যথারীতি কাজে যোগ দেবেন।’

কিন্তু এই সিদ্ধান্ত থেকেও শেষমেশ সরে গেছেন চা শ্রমিক নেতারা। কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তারা।

আজ রোববার সকালে শ্রমিক নেতা রাজু গোয়ালা বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বলেছেন যে, আন্দোলন চলবে, বাগান বন্ধ থাকবে। কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তে আমাকেও সমর্থন দিতে হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে শ্রমিকরা আজও কাজে যোগ দেয়নি।’

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *