কানাইঘাট-জকিগঞ্জে প্লাবিত ৩০০ গ্রাম, তবু চলছে ভোটের প্রস্তুতি

সিলেট

আকস্মিক বন্যায় ভাসছে সিলেটের অন্তত নয়টি উপজেলা। বন্যায় প্লাবিত এই ৯ উপজেলার মধ্যে কানাইঘাট ও জকিগঞ্জে কাল (বুধবার) উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।

সরকারি হিসাবে এই দুই উপজেলার অন্তত ৩০০ গ্রাম প্লাবিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে ভোটের প্রস্তুতি।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের তথ্য অনুযায়ী, জেলার সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর মধ্যে সুরমা নদীর কানাইঘাট উপজেলার কানাইঘাট পয়েন্টে ৬১ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর জকিগঞ্জের অমলশিদ পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এদিকে, জকিগঞ্জের এক চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট গ্রহণ পেছানোর আবেদন করেছেন। যদিও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, যথাসময়ে ভোট নেওয়া হবে। বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি আশঙ্কায় এই ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত বলে বলে তারা জানিয়েছেন।

সোমবার সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, জকিগঞ্জের নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং কানাইঘাটের আট ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা বন্যাকবলিত। জকিগঞ্জে ১১০টি এবং কানাইঘাটে ১৯০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া জকিগঞ্জে ১ লাখ ৫১ হাজার ৭৯৮ জন এবং কানাইঘাটে ৮০ হাজার ৬০০ জন বন্যায় কবলিত।

সিলেটের জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান বলেন, ‘দুটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। তাই বুধবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এমনটা ধরে নিয়েই সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।’

জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মরতুজা আহমদ বলেন, তার উপজেলার ৭৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩০টি কেন্দ্রেই বন্যার পানি আছে। উপজেলার অন্তত ১৫০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় সেসব গ্রামের বাসিন্দারা পানিবন্দি সময় কাটাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে গত শনিবার তিনি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা তাসলিমের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

এ বিষয়ে আফসানা তাসলিম বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী সামনে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই ভোট গ্রহণের বিষয়টি নির্দিষ্ট তারিখেই শেষ করার উদ্দেশ্যে কাজ চলছে।

এ বিষয়ে সিলেটের জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান জানান, যথাসময়েই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে জকিগঞ্জ উপজেলার ৫টি কেন্দ্র এবং কানাইঘাট উপজেলার ৪টি কেন্দ্র বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় বিকল্প কেন্দ্রের তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। বিকল্প কেন্দ্রগুলোকে কমিশন অনুমোদন দিলে প্লাবিত কেন্দ্রগুলোর বদলে নতুনগুলোতে ভোট নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *