কুলাউড়ায় জমেছে নির্বাচনি ‘খেলা’

মৌলভীবাজার

চারটি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত প্রবাসী ও পর্যটন অধ্যুষিত, পাহাড় ও হাওর বেষ্টিত চায়ের রাজধানী মৌলভীবাজার জেলা। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ চারটি আসনে স্বতন্ত্র ও দলীয় মিলে ২২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) ছাড়া অন্য কোনো আসনে নেই উল্লেখযোগ্য হেভিওয়েট প্রার্থী। তাই সবার মুখেমুখে চাওর হচ্ছে এখন শুধু কুলাউড়াতেই হবে নির্বাচনের আসল খেলা।
জানা গেছে, জেলার চারটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কুলাউড়া আসন ছাড়া অন্য কোনো আসনে নেই হেভিওয়েট প্রার্থী। এ কারণে ১, ৩ ও ৪ আসনে নৌকার প্রার্থীর বিজয় অনেকটাই নিশ্চিত। অন্যদিকে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনটি প্রায় দেড় দশক পর মহাজোটের গ্যাঁড়াকল মুক্ত হয়েছে। এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। তার প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন আরও তিন হেভিওয়েট প্রার্থী।
তারা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ করা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ একেএম সফি আহমদ সলমান, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সাবেক এমপি এম এম শাহীন ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি আব্দুল মতিন। তাদের ঘিরে চলছে এখন সব আলোচনা।
আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুর এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ ১৯৯১ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নৌকা নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে আবার নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে নৌকা নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে পরাজিত এবং ২০১৮ সালে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না।
২১ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৫ জনসংখ্যার মৌলভীবাজারের নির্বাচনে অংশ নেওয়া দুয়েকটি দলের প্রার্থী ছাড়া অন্যরা ভোটারদের কাছে অপরিচিত। প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচিতি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, দলীয় কিংবা ব্যক্তি ইমেজ স্থানীয় ভোটারদের দৃষ্টি আর্কষণ কিংবা সহজে মন জয় করে নেওয়ার ব্যতিক্রমী গুণ এমন প্রার্থীর পরিসংখ্যান খুবই কম। তাছাড়া নানা কারণে বিএনপি, জামায়াত ও তাদের সমমনা দল নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় এ জেলার সংসদীয় আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী হেভিওয়েট প্রার্থী নেই বললেই চলে।

জেলার চারটি আসনের প্রার্থীরা হলেন মৌলভীবাজার-১ আসনে বর্তমান এমপি ও সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন (নৌকা), জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ময়নুল ইসলাম এবং তৃণমূল বিএনপির মো. আনোয়ার হোসেন (সোনালি আঁশ)।
মৌলভীবাজার-২ আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ একেএম সফি আহমদ সলমান (ট্রাক), তৃণমূল বিএনপি থেকে এম এম শাহীন (সোনালি আঁশ), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল মতিন (কাঁচি), জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে আব্দুল মালিক, ইসলামী ঐক্যজোট থেকে মাওলানা আছলাম হোসাইন রাহমানী, বিকল্পধারার মো. কামরুজ্জামান সিমু ও ইসলামী ফ্রন্টের এনামুল হক মাহতাব।
মৌলভীবাজার-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, জাসদের মশাল প্রতীকে আব্দুল মোছাব্বির, ওয়ার্কার্স পার্টির তাপস কুমার ঘোষ, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে মো. আলতাফুর রহমান, সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের ফাহাদ আলম, ইসলামী ফ্রন্টের আব্দুর রউফ ও এনপিপির আবু বক্কর।

মৌলভীবাজার-৪ আসনে বর্তমান এমপি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ (নৌকা), ইসলামী ঐক্যফ্রন্টের আ. মুহিদ হাসানী এবং ইসলামী ঐক্যজোট থেকে মো. আনোয়ার হোসাইন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *