সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি ও সেকেন্ড অফিসারের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানীর অভিযোগে ডিআইজি ও এসপি বরাবর দরখাস্ত করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এই অভিযোগ দায়ের করেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ১ নং পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের তাজুল মিয়ার ছেলে মো. সফাত মিয়া।
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি শাহ আরেফিন টিলা থেকে পাথর পরিবহনের গাড়ি থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কোম্পানীগঞ্জ থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই), সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) ১৩ জনকে ক্লোজড করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
অভিযোগে সফাত মিয়া উল্লেখ করেন, “কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজায়ের আল মাহমুদ আদনানের তত্বাবধানে এবং থানার সেকেন্ড অফিসার নিয়াজ মোহাম্মদ শরীফের নির্দেশে সম্প্রতি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংরক্ষিত শাহ আরপিন এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে পাথর আহরণ ও সেখানে চলাচলরত পাথর বহনকারী ট্রাক্টর থেকে ব্যাপকভাবে অবৈধ চাঁদা আদায় শুরু করেন। এ ব্যাপারে সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হলে প্রশাসনিকভাবে শাহ আরপিন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি এবং সেকেন্ড অফিসার কর্তৃক পাথর বহনকারি ২০ টিরও অধিক ট্রাক্টর আটকিয়ে অধিকাংশ ট্রাক্টর থেকে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করে তা ছেড়ে দেয়া হয়। এর মধ্যে মাত্র ২টি ট্রাক্টর জব্দ দেখিয়ে মামলা করা হয় । আমি একজন নিরপরাধ ব্যক্তি গত ১২ ফেব্রুয়ারী খোঁজ নিয়ে জানতে পারি কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই আবদুল্লাহ আল মামুন বাদি হয়ে আমি এবং অপরাপর স্বাক্ষীদের আসামী করে সরকারী কর্তব্য পালনে বাঁধা দেওয়া সংক্রান্ত মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি একজন নিরীহ আমদানী এলসি ক্রাশিং করা ভাংঙ্গা পাথর সাপ্লায়ার কারি ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর দিয়ে আমি আমার বৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি, পক্ষান্তরে দরখাস্তে উল্লেখিত স্বাক্ষীরাও এলাকার নিরীহ ব্যাক্তি হোন। আমরা ইতোপূর্বে ওসি ও সেকেন্ড অফিসারের এহেন অনৈতিক কর্মের প্রতিবাদ করেছি, যার ফলশ্রুতিতে উক্ত কর্মকর্তা দ্বয় সম্পূর্ণ অন্যায় লাভের দূরাশায় আমাদেরকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছেন। আমাদেরকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে অন্যায় ভাবে হয়রানীর প্রতিকারের জন্য মহোদয়ের দ্বারস্থ হলাম।’
মো. সফাত মিয়া জানান, ‘আমার কোনো ট্রাক্টর নেই। পুলিশ ২০ টি ট্রাক্টর আটকিয়ে ১৫ টা টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে আর ৫ টা নিজেদের হাতে রেখে ২ টা দিয়ে মামলা দিয়েছে। এই ৫ গাড়ির কাউকেই আসামি না দিয়ে আমরা নিরীহ মানুষদের আসামী দিয়েছে। টাকার বিনিময়ে তারা কাউকেই আসামী রাখে নি। অথচ এসবের সাথে আমরা কেউই জড়িত না। আমরা অধিকাংশই এলসি ব্যবসায়ী।’
এবিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, ‘আমার যে ডিউটি অফিসার ছিল সে ট্রাক্টর ধরে মামলা দিয়েছে। তাদের অভিযোগগুলো অসত্য। একটা শ্রেণি যারা লুটপাট করতে পারতেছে না আমরা এদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছি তারা এসব করতেছে। তারা আমাদের পুলিশ পোস্ট যে ছিল, সেটা জ্বালিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান দেওয়ার কারণে এটা করেছে।