সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারিগুলো বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছে উপজেলা ও আশপাশ এলাকার লাখ লাখ মানুষ।বিশেষ করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষগুলোর জীবন চরম দুর্বিসহ হয়ে ওঠেছে। অসহায় মানুষের নিরব কান্না শুনার ও দেখার যেনো কেউ নেই।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানুষগুলোর জীবনজীবিকা পাথরশ্রম ও পাথর ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। গত চার বছর ধরে পরিবেশের দোহাই দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পাথর কোয়ারিগুলো।এরই মধ্যে দু’দফার ভয়াবহ বন্যা মরার উপর খাড়ার ঘা। বন্যায় ভেস্তে গেছে মানুষের শেষ সম্বলটুকুও।
এ ঘা সইয়ে জীবন নিয়ে বাঁচার কোনো উপায় অবলম্বন নেই মানুষজনের। অনেক পাথর ও মৎস্য ব্যবসায়ী আবার ঋণগ্রস্ত। ব্যাংক ও বীমার ঋণ তাড়া করছে তাদের। সব মিলিয়ে চরম দুর্বিসহ হয়ে ওঠেছে উপজেলার মানুষের জীবন যাপন। উপজেলা ও তৎপার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের একমাত্র কর্মসংস্থান পাথর কোয়ারি খোলে না দিলে ঘটতে পারে এক মহা মানবিক বিপর্যয়। আর এহেন বিপর্যয় ঠেকাতে অবিলম্বে পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়া প্রয়োজন বলে সচেতন মহল মনে করছেন।
অন্যথায় সিলেট জুড়ে ঘটে যেতে পারে তীব্রতর গণবিস্ফোরণ।
কোম্পানীগঞ্জ পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিল মেম্বার বলেন,বিদেশ থেকে পাথর আমদানি করার কারনে পাথরের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়াও রিজার্ভের উপর চাপ বাড়ছে। দেশিয় খনি থেকে পাথর উত্তোলন করলে পাথরের দাম ৫০টাকা পর্যন্ত কমে আসবে।
কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শাব্বির আহমদ জানান,এ অঞ্চলের লাখো প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বংশপরম্পরায় পাথর কোয়ারী থেকে পাথর আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। সাম্প্রতিক প্রলয়ঙ্কারী বন্যায় গরীব এ মানুষগুলো চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের বাঁচাতে পাথর কোয়ারী খোলে দেয়া ছাড়া আর কোন পথ নেই। তাছাড়া দেশের রিজার্ভ সংকটের এ ক্রান্তিলগ্নে পাথর আমদানী না করে কোয়ারী খোলে দিলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
এদিকে, কোম্পানীগঞ্জ পাথর ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ গত ২৩ জুলাই উপজেলা সদরস্থ তাদের নিজস্ব কার্যালয়ে পাথর কোয়ারী খোলে দেয়ার দাবীতে সভা অনুষ্ঠিত হয়।পরদিন ২৪ জুলাই বৃহত্তর সিলেট পাথর ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদ দক্ষিণ সুরমাস্থ কার্যালয়ে পাথর কোয়ারী খোলার দাবীতে সভা করেছেন। সভায় পাথর ব্যাবসায়ী ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে পাথর কোয়ারিগুলো খোলে না দিলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলারও হুঁশিয়ারি দেন।
ওই সভায় সিলেটের পাথর কোয়ারী সমুহ খোলে দেয়ার দাবীতে আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়। আন্দোলনের প্রাথমিক কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে-সিলেটের জাফলং,ধোপাগুল এবং ভোলাগঞ্জে জনসংযোগ ও মতবিনিময় এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি পেশ।
শেয়ার করুন