কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত থেকে লাশ উদ্ধার হওয়া যুবককে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল

জাতীয়

এক যুবককে খালি গায়ে বাঁশের সঙ্গে দুই হাত পিছমোড়া দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। বেঁধে রাখা যুবককে ঘিরে রেখেছেন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের হাতে লাঠি ও টর্চলাইট। বেঁধে রাখা বাঁশটি দুই ব্যক্তি মিলে তুলছেন। এতে খালি গায়ে থাকা যুবক ব্যথায় চিৎকার করে উঠছেন। এ সময় আরেক যুবক লাঠি হাতে বেঁধে রাখা যুবকটিকে মারধর করছেন। আবার ভাঙা বাংলায় বিভিন্ন প্রশ্ন করছেন।

৩ মিনিট ২২ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও রোববার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

সুরমা ভয়েস নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি ছড়িয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার ওই তরুণে নাম নুর জামিন (২৩)। তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চিকাডহল গ্রামের মৃত হানিফ আলীর ছেলে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভারত সীমান্ত এলাকা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নারাইনপুরের একটি খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, নিহত যুবকের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে স্থানীয় কয়েকজন নারাইনপুর এলাকায় মাছ ধরতে যান। মাছ ধরার এক পর্যায়ে তারা খালে লাশটি ভাসমান অবস্থায় দেখতে পান। পরে বিজিবি ও পুলিশকে বিয়ষটি জানানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

নুর জামিন বিবাহিত। তিনি মোটরসাইকেলে ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করার কাজ করতেন।

তার স্ত্রী স্মৃতি বেগম বলেন, শনিবার রাতে পরিচিত কয়েকজন তার স্বামীকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। এর পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাকে কোনোভাবে ভারতে নিয়ে গিয়ে দুর্বৃত্তদের হাতে তুলে মেরে ফেলা হয়েছে বলে দাবি স্মৃতির।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে ভিডিও প্রসঙ্গে আলাপ করলে তাঁরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ধারণ করা ভিডিওটি ভারতের অংশে। নিহত নুর জামিন হয়তো ভারতে চলে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁকে চোর সন্দেহে মারধর করা হয়েছে।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমেদ জানান, নিহত যুবকের শরীরের মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। লাশ উদ্ধারের পর রোববার ময়নাতদন্ত শেষে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহত যুবকের মা বাদী হয়ে রোববার রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ছড়িয়ে পড়া ভিডিও প্রসঙ্গে ওসি বলেন, বিষয়টি পুলিশের নজরে এসেছে। ভিডিওর বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *