লন্ডনে চিকিৎসা নেয়ার ৪ মাস পর দেশে ফিরেছেন সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দুই পুত্রবধূসহ সঙ্গে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডক্টর এনামুল হক চৌধুরী। তিনি সিলেটের কৃতিসন্তান। গণতন্ত্রের লড়াইয়ে কাজ করেছেন সম্মুখ সারিতে। জিয়া পরিবার তথা বিএনপি’র সঙ্গে তাঁর আত্মার সম্পর্ক।
হিথ্রো বিমানবন্দরে মাকে বিদায় জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই পুত্রবধূ ছাড়া আরোও রয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন, এপিএস মাসুদুর রহমান ও দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম ও রূপা হকও থাকবেন।
খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে নজিরবিহীন নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গড়ে তোলা হয়েছিল এই নিরাপত্তাবলয়। ঝুঁকি বিবেচনায় ডা. জোবায়দা রহমানকেও বিশেষ নিরাপত্তা দিয়েছে পুলিশ।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট নং বিজি-২০২ লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করার কথা ছিল রবিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে। কিন্তু পরে তিনি কাতার আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরেছেন। খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর টারমাকে দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থেকে বিএনপির শীর্ষনেত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে করে ৮নং গেট দিয়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর গুলশানের উদ্দেশে রওনা হয়। বিমানবন্দর মোড় থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে তাদের প্রিয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসার পর ২৫ জানুয়ারি তিনি তারেক রহমানের বাসায় লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অর্ধ যুগের বেশি সময় পর লন্ডনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গত ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করেন খালেদা জিয়া। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দি অবস্থায় চারটি ঈদ কেটেছে কারাগার ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।
২০১৮ সালে খালেদা জিয়া একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। করোনা মহামারির সময় বিগত সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।
শেয়ার করুন