গত ২০ ঘণ্টায় পুড়েছে ১৮ যানবাহন

জাতীয়

বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালে প্রায় ২০ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৮টি যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুর দেড়টা থেকে আজ সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত এসব আগুনের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক ১৬টি আগুন লাগার সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এসব আগুনে পুড়েছে ১৮টি যানবাহন।

এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে তিনটি, ঢাকা বিভাগে একটি, রাজশাহী বিভাগে (নাটোর,বগুড়া,সিরাজগঞ্জ) সাতটি, চট্টগ্রাম বিভাগে (ফেনী, মিরসরাই, সাতকানিয়া) চারটি, ময়মনসিংহ বিভাগে (জামালপুর) একটি ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিসের বার্তায় বলা হয়, আগুনে ৯টি বাস, একটি কাভার্ড ভ্যান, ছয়টি ট্রাক, একটি সিএনজি, একটি ট্রেনের তিনটি বগি পুড়ে যায়। আগুন নির্বাপণ করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ২৯ ইউনিট ও ১৪৪ জন কর্মী কাজ করেন।

বিএনপির এই অবরোধ-হরতালের কর্মসূচি শুরু হয়েছে গত ২৮ অক্টোবরের সহিংসতাকে কেন্দ্র করে। সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে সেদিন রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করছিল বিএনপি। একই সময়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করছিল আওয়ামী লীগ। আর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই মতিঝিলের দিকে মাঠে ছিল জামায়াতে ইসলামী।

ওইদিন বিএনপির সমাবেশ চলাকালে এক পর্যায়ে দৈনিক বাংলা মোড়, কাকরাইল ও পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি। আগুন, ভাঙচুর ও ককটেল ছোড়া হয়। পিটিয়ে হত্যা করা হয় পুলিশের এক কনস্টেবলকে। এ ছাড়া সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা গেছেন আরও একজন।

এ অবস্থায় সমাবেশ কর্মসূচি চলার মধ্যেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৯ অক্টোবর সারা দেশে হরতালের ডাক দেন। পরে একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। অজ্ঞাত স্থান থেকে রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি দেন। বিএনপির অবরোধে একাত্মতা জানায় জামায়াতে ইসলামীও।

এর পর এ পর্যন্ত পাঁচ দফায় অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এতদিন সরকারের পদত্যাগসহ কয়েকটি দাবিতে অবরোধের ডাক দেয়া বিএনপি সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে রোববার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয়।

বিএনপির ডাকা অবরোধে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল নিক্ষেপসহ নানা সহিংসতা হচ্ছে। কঠোর অবস্থানে থেকে দলটির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। তবে আতঙ্ক সঙ্গে করেই বাইরে বের হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *