গর্ভপাতকে নারীর সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ফ্রান্স।
গতকাল সোমবার ফ্রান্সের পার্লামেন্ট ভার্সাই প্রাসাদে এই আইন পাস করেন দেশটির আইনপ্রণেতারা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল সোমবার ভার্সাই প্রাসাদে নজিরবিহীন সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পাস হয় এই আইন। আইনপ্রণেতাদের মধ্যে ৭৮০ জন এর পক্ষে ভোট দেন, বিরোধিতা করেন মাত্র ৭২ জন। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত এসংক্রান্ত একটি আইন আটকে দিলেও ফ্রান্সে এই আইন পাস হওয়ায় নারী অধিকারকর্মীদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বয়ে গেছে।
ফরাসি পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ও সিনেটে বিলটি পাস হয়ে গেছে। দেশটির সংবিধানের ৩৪ অনুচ্ছেদ সংশোধনের মাধ্যমে দেশটির নারীদের গর্ভপাতের অধিকার দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ফ্রান্স গর্ভপাতকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিল।
ফরাসি পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের প্রধান ইয়েল ব্রুন-পিভে এই বিল পাসের পর বলেছেন, ‘এ ক্ষেত্রে ফ্রান্স একটি নজির স্থাপন করল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি এই পার্লামেন্ট নিয়ে গর্বিত, যে পার্লামেন্ট গর্ভপাতকে একটি মৌলিক আইন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।’
এই বিল পাসের পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আত্তালও। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সব নারীর কাছে বার্তা পাঠাচ্ছি যে, আপনার শরীর একান্তভাবেই আপনার এবং এখানে অন্য কারও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এই বিল প্রাথমিকভাবে উত্থাপিত হয়। এরপর গত সপ্তাহের বুধবার উচ্চকক্ষ সিনেটে ভোটাভুটিতে পক্ষে ২৬৭ ও বিপক্ষে ৫০ ভোট পড়ে। দেশটির আইনমন্ত্রী এরিক দুপুন্দ মোরেতে এই বিলকে নারী অধিকার নিশ্চিতে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
সম্প্রতি গর্ভপাত আইন পাস করতে গিয়ে মধ্য ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড সরকার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়ে। এরপর দেশটির সাংবিধানিক আদালত ২০২০ সালে নারীদের স্বেচ্ছায় গর্ভপাতকে নিষিদ্ধ করা হয়। এমনকি গর্ভে ডাউন সিনড্রোমসহ বিকৃত ভ্রূণের ক্ষেত্রেও এই আইন কার্যকর করার বিধার রাখা হয়েছে।
শেয়ার করুন