গোয়াইনঘাটে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর আত্মহত্যা, পরিবারের দাবি হত্যা: শ্বাশুড়ি আটক, স্বামী ও দেবর পলাতক

সিলেট

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ

সিলেটের গোয়াইনঘাটে ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর আত্মহত্যা, পরিবারের দাবি হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ শাশুড়িকে আটক করেছে। এ ঘটনায় স্বামী ও দেবর পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গোয়াইনঘাট উপজেলার ১০ নং পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের পুকাশ দিঘির পার গ্রামে। নিহতের নাম রিপা বেগম (২৩)। সে পার্শ্ববর্তী আব্দুল মহল গ্রামের দিনমজুর আনিসুলের মেয়ে এবং পুকাশ দিঘির পার গ্রামের সোহেল আহমদের স্ত্রী। সরেজমিন পরিদর্শন ও থানায় লিখিত অভিযোগ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩ বছর পূর্বে সোহেলের সাথে রিপা বেগমের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় এবং তাদের ২ বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে। নিহত রিপা বেগম ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

বিয়ের পর থেকে রিপার উপর স্বামী ও পরিবারের লোকজন বিভিন্ন ইস্যুতে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। এসব ঘটনায় একাধিক বার সালিশ বিচার হয়েছে এবং গোয়াইনঘাট থানায় রিপা ও রিপার বাবা বাদী হয়ে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং সালিশগণ এসব ঘটনা নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যার সময়ও একটি সালিশ বৈঠক ছিল। সালিশগণ বৈঠকে বসা মাত্র রিপার শাশুড়ী এসে বৈঠকে বলেছেন রিপা আত্মহত্যা করেছে। এ সময় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে বিছানার উপর থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রির্পোট তৈরী করে এবং শাশুড়ি তেরাবানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য লাশ সিওমেক হাসপাতালে প্রেরণ করে। ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিকেলে রিপার লাশ তার বাবার বাড়ি আব্দুল মহল গ্রামে নিয়ে আসেন এবং বাদ মাগরিব আব্দুল মহল ঈদগাহ মাঠে জানাজ শেষে গ্রামের পঞ্চায়েতি কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ঘটনার পর থেকে রিপার স্বামী সোহেল ও দেবর ফয়সল পলাতক রয়েছেন। জানতে চাইলে নিহত রিপার বাবা আনিসুল জানান, ঘটনার ২ ঘন্টা পূর্বে আমার মেয়ে আমাকে ফোন করে বলেছে বাবা তাড়াতাড়ি এসে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও, ওরা (স্বামীর পরিবার) আমাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে। তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, আমার মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি প্রশাসনের কাছে সঠিক তদন্ত করে আসামীদের আটক ও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান। গোয়াইনঘাট থানার ওসি তদন্ত মেহেদি হাসান বলেন, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিওমেক হাসপাতালে প্রেরণ করি এবং শাশুড়িকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *