গোয়াইনঘাটে আমনের বাম্পার ফলন

সিলেট

সিলেটের গোয়াইনঘাটের সর্বত্রই আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির চাষাবাদ প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসা, বীজতলা ও উন্নত জাতের ব্যবহারের মাধ্যমে এবার গোয়াইনঘাটের ফসলের মাঠ অন্যান্য বছরের তুলনায় ফলন হয়েছে অনেক বেশি। কৃষকদের মধ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগের সার্বিক দিক নির্দেশনা, ওষুধ কীটনাশক ব্যবহারে সঠিক নিয়ম মাত্রা প্রয়োগে হাতে কলমে বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে কৃষকদের ঊদ্ধুদ্ধ করণের ফলে কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছেন।

গোয়াইনঘাটে এবার আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকদের মাঝেও বাড়তি আবহ এবং প্রাপ্তির হাসি ফুটে ওঠেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে গোয়াইনঘাটে এবার আমন রোপনের লক্ষ মাত্রা ছিলো ১৭ হাজার ২শত ৩৫ হেক্টর এবং অর্জন হয়েছে ১৭ হাজার ৮শত ৩৫ হেক্টর আমন ধান। কৃষকদের ধান রোপনে বাড়তি তৎপরতা ও কাজের পরিধি বেশি থাকায় তা লক্ষমাত্রা ছাড়িয়েও অনেক বেশি রোপন করেন কৃষকরা।

গোয়াইনঘাট জুড়ে ফসলের মাঠে এবার ব্রি ধান ৩২, ৪৯, ৫১, ৫২, ৬৪, ৭১ নিচু এলাকা সমুহে বিআর ২২,২৩ ও হাল নাগাদ সংযুক্ত ব্রি ৮৪ উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল বীজ দিয়ে আমন ধাণ ফলিয়েছেন কৃষকরা। এখন পর্যন্ত রোপিত আমন ধান কাটা হয়েছে ৯৭% ধান।

আবহাওয়া ও রোগ বালাই কম হওয়াতে উৎপাদিত এসব আমন ধান থেকে ৪৭ থেকে ৪৮ হাজার টন চাল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। কথা হলে উপজেলার গোয়াইন গ্রামের সফল কৃষক সুবাস চন্দ্র পাল ছানা জানান, এবার আবহাওয়া অনুকুলে ছিলো এ জন্য কৃষকরা তাদের এক তৃতীয়াংশ ভ’মি চাষাবাদ করে ফসল ফলিয়েছেন। তাছাড়া কৃষি বিভাগের সার্বিক দিক নির্দেশনা, কৃষকদের জন্য সরকারের সার, বীজ, প্রনোদনা যান্ত্রিক পদ্ধতির কষি উপকরণ ক্রয়ে ভর্তুকির ব্যবস্থা গোয়াইনঘাটে আজকে কৃষি বিপ্লবের নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।

সরকারের তরফে মহা পরিকল্পনা করে পিয়াইন, গোয়াইন নদী খনন, নদী সমুহের তীরবর্তী এলাকা সেচের আওতায় নিয়ে আসা ও পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থা করা হলে গোয়াইনঘাটের পতিত হাজার হাজার হেক্টর ফসলী জমি চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব। এটা বাস্তবায়িত হলে শুধ সিলেট নয় দেশের কয়েকটি জেলারও চালের চাহিদা মেটানো সম্ভব।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ রায়হান পারভেজ রণি জানান, গোয়াইনঘাটের ফসলী জমি উর্বর। এ মাটিতে সব ধরণের ধান, রবিশষ্যসহ যে কোন ফসল ফলানোর উপযোগি। উপজেলার কৃষকদের আমাদের কৃষি বিভাগের সার্বিক দিক নির্দেশনা, কৃষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষন, কর্মশালা ও প্রনোদনা দিয়ে পাশে আছে। উন্নত জাতের ধান বীজ রোপনে কৃষকদের নিয়মিত উৎসাহিত করা হচ্ছে। এবার আমন রোপনের আমাদের লক্ষ মাত্রা ১৭ হাজার ২শত ৩৫ হেক্টর হলেও কৃষকরা এর চেয়েও বেশি আমন ধান রোপন করেছেন। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ১৭ হাজার ৮শত ৩৫ হেক্টর আমন ধান। এখন পর্যন্ত ৯৭% ধান কাটা ও গোলায় উঠানো সম্ভব হয়েছে। উৎপাদিত এসব আমন ধান থেকে ৪৭ থেকে ৪৮ হাজার টন চাল পাওয়া যাবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *