গোয়াইনঘাটে আশ্রয়ণের ঘর দেয়ার নামে ভিখারির টাকা আত্মসাত!

সিলেট

গোয়াইনঘাটের ডৌবাড়ী ইউনিয়নের যাত্রাভা গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব বিধবা নিয়ারুন নেছা। স্বামী মারা যাওয়ার পর নিঃসন্তান এই মহিলার ভিক্ষা করেই চলছে জীবন। নিজের ঘর না থাকায় মানুষের বাড়ী থাকেন। জীবনের শেষ সময়ে এসে একটু ভালোভাবে থাকার আশায় বুক বেঁধেছিলেন নিয়ারুন।

প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে অসহায় এই ভিখারির কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন গোয়াইনঘাট উপজেলার মিসবাহ উদ্দিন নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা।

তিনি ডৌবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

জানতে চাইলে কান্নাজড়িত কন্ঠে অসহায় নিয়ারুন নেছা জানান, এখন আর আগের মত চলাফেরা করতে পারেন না।  বয়সের ভার আর নানাবিধ রোগ শরীরে বাসা বেঁধেছে। তবুও মানুষের বাড়ী বাড়ী এবং গ্রাম থেকে সিলেট শহরে গিয়ে ভিক্ষা করে টাকা জমিয়ে দিয়েছিলের মিসবা’র কাছে, শুধুমাত্র একটি ঘরের আশায়। কিন্তু টাকা দেয়ার ২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কোন ঘরতো পানইনি। এমনকি, টাকাও ফেরত পাননি।

নিয়ারুনের আক্ষেপ,‌ টাকা নিলো কিন্তু আমারে ঘর আর দিলউনা।

শুধু নিয়ারুন বেগমই নয়, ঘর পাওয়ার আশায় মিসবাহ’র প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন একই গ্রামের শাহাবুদ্দীন নামের আরেক ব্যক্তি।

নিয়ারুন বেগমের মত তিনিও প্রায় একই অভিযোগ করেন। বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেতে তার কাছ থেকে ধাপে ধাপে ১৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মিসবাহ। দিনমজুর শাহাবুদ্দিন ঘর পাওয়ার আশ্বাসে একটি গরুর বাচ্চা ও একটি ছাগল বিক্রি করে টাকাগুলো দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রায় ২ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো তার ভাগ্যে জুটেনি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর। টাকা ফেরত চাইতে গেলে মিসবাহ’র তরফ থেকে আসে নানা হুমকি ধমকি।

তিনি আরও জানান, নিরুপায় হয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে গত ১৪মে (রোববার) একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এ দুুই ভুক্তভোগী।

এ বিষয়ে ৯নং ডৌবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. নিজাম উদ্দিনেকাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমিও লোকমুখে শুনেছি এরকম অভিযোগের কথা, এটা প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের আশ্রয়নপ্রকল্প। এটা নিয়ে যে বা যারা এমন প্রতারণা করছে বা করবে, সে যত বড় লোক হোক আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাহ উদ্দিনের মোবাইলে কল দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর দশমিনিট পরে কথা বলার  আশ্বাস দেন।

কিন্তু এরপর বারবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *