মারজানুল আযহার জুনেদ, গোয়াইনঘাট :
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামের গৃহিনী শিরিনা বেগম ওয়ার্ল্ড ভিশনের হতদরিদ্র উন্নয়ন প্রকল্পের সদস্য। তার স্বামী একজন দিনমজুর। শিরিনা বেগমের দুই ছেলে এক মেয়ে এবং স্বামীসহ ৫ সদস্যের পরিবার। বড় মেয়ে (১১) ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের রেজিস্টার্ড শিশু। ২০২২ সালে ওয়ার্ল্ড ভিশন গোয়াইনঘাট এপির আলীরগাঁও পিএফএ থেকে গ্রাম উন্নয়ন কমিটির মাধ্যমে বাছাইকৃত ইউপিজি হিসেবে এককালীন ১৮,০০০ (আঠারো হাজার) টাকার নগদ একটি আর্থিক সহায়তা পান। তা দিয়ে তিনি উনার ব্যক্তিগত সঞ্চয় মিলিয়ে ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা দামের একটি গরু ক্রয় করেন। এটি লালন-পালন করেন এবং বছর ঘুরতেই ১টি বাছুরও পান। যেগুলোর বাজার মূল্য এখন প্রায় ৬৫ হাজার টাকা। এছাড়াও তিনি বাড়ির চারপাশ জুড়ে সবজীও চাষ করছেন। সেখানে তিনি চালকুমড়া, পুঁইশাক, বেগুন, লাউ, পেঁপে, ঝিঙা, করলা, মরিচ এবং লালশাক সহ বিভিন্ন ধরণের সবজী চাষ করেছেন। মুষ্টি চাল আর জমানো টাকা দিয়ে ৫টি হাঁসের বাচ্চা এবং ৬টি মোরগের বাচ্চা কিনেন ১২০০ টাকায়। সেখান থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৫টি হাঁস এবং পূর্বের ৭টি সহ মোট ৪০টি মোরগ হয়। যেগুলোর বাজার মূল্য প্রায় ১৮০০০ হাজার টাকা। হাঁস এবং মুরগি থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৫/২০ টি ডিম পাচ্ছেন যা বিক্রি করে আয় বেড়েছে শিরিনা বেগমের। আবার, নিজের ২টি গরুর পাশাপাশি বোনের কাছ থেকে আরও একটি গরু বর্গা নিয়ে লালন-পালনের পাশাপাশি এছাড়াও প্রায় ৬ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে মাঠে ফসল উৎপাদন করছেন স্বামী কবির। আর শিরিনা বেগম উৎপাদন খরচের যোগান দিচ্ছেন হাঁস-মোরগ এবং ডিম বিক্রির টাকা থেকে।
গোয়াইনঘাট এপি থেকে পাওয়া বন্যা পরবর্তী ত্রাণ সহায়তার ৪৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছিলেন ১টি ছাগল। আজ তিনি ৫ টি ছাগলের মালিক। এক সময় যার আয়ের উৎস ছিল মাত্র একটি এখন সেখানে রয়েছে পাঁচটি।আগে যেখানে স্বপ্ন দেখতেন খড়কুটোর কুঁড়ে ঘরে কোনোরকম দিনাতিপাত করার এখন সেখানে সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে মানুষ করা সহ একটি স্বচ্চল নিরাপদ জীবনের স্বপ্ন বুনছেন প্রতিনিয়ত। শিরিনা বেগমকে উপার্জনের সুযোগ করে দিয়ে সামনে এগিয়ে নেয়ায় এবং তার সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করায় ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রতি কৃতজ্ঞ তিনি।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ল্ড ভিশনের আলীরগাঁও পিএফএর প্রোগ্রাম অফিসার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওয়ার্ল্ড ভিশন গোয়াইনঘাট এপি উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ২৪টি গ্রামে বিগত প্রায় এক যুগ থেকে প্রতিবছর পিছিয়ে পড়া হতদরিদ্র মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিশুর সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার লক্ষ্যে স্বচ্চতা, জবাবদিহিতার মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে।