গোয়াইনঘাটে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কোটি টাকার উপরে ক্ষয়ক্ষতি

সিলেট

তানজিল হোসেন, গোয়াইনঘাট: সিলেটের গোয়াইনঘাটে কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। প্রায় ১৫ মিনিটের কাল বৈশাখী ঝড়ের সময় বড় বড় শিলাখণ্ডের আঘাতে বোরোধান, শাকসবজি ও দোকানপাটসহ কয়েকশত বাড়িঘরের টিনের চালা বিধ্বস্ত হয়েছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এই শিলাবৃষ্টি দেখে আঁতকে ওঠেন অনেকেই। রোববার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই কাল বৈশাখী ঝড় শুরু হলে এটি প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী হয়।

সোমবার (১লা এপ্রিল) স্মরণকালের ভয়াবহ কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গোয়াইনঘাটের ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন নন্দীরগাঁও ইউপির বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম।

পরিদর্শন শেষে আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতি এবং জরুরি চাহিদার পরিমাণ নিরুপণ করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ বলেন, উপজেলার মধ্যে পশ্চিম জাফলং, গোয়াইনঘাট সদর, তোয়াকুল ও নন্দীরগাঁও ইউনিয়নে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে নন্দীরগাঁও ইউনিয়নেরই ৫২৫টি ঘর এবং বাকি ৩ ইউনিয়নে ৫০টি সহ মোট ৫৭৫টি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি বলেন, দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কাছে চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় এক কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ প্রয়োজন।
জানতে চাইলে গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সুমন বলেন, সদর ইউনিয়নে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি আলহামদুলিল্লাহ।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগে কবলিত চার ইউপির ৫৭৫টি ঘরের টিনের চালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় ১১৫০ বান্ডিল ঢেউটিন ৩৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন। এছাড়া উপজেলার কৃষিজমির মধ্যে প্রায় ৭ হেক্টর বোরোধান, ১০ হেক্টর সবজি, ০.৫০ হেক্টর ভোট্টা, ২ হেক্টর নাগা মরিচ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে সরেজমিন পরিদর্শনকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম গোয়াইনঘাটের সালুটিকর বাজার মনিটরিং করেছেন। মনিটরিংয়ে সালুটিকর বাজারসহ অন্যান্য স্থানীয় বাজারে ঘরের চালা হিসেবে টিনের চাহিদা বাড়ায় টিনের ডিলারগণ যাতে ন্যায্য দাম রাখেন, এ জন্য সালুটিকর বাজারের টিন ব্যবসায়ীদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়।

এ সময় নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস কামরুল হাসান আমিরুল, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন। এ এলাকায় সালুটিকর বাজার সহ আনুমানিক ৫০০ ঘরবাড়ি বিশেষভাবে টিনের চালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারি চাহিত বরাদ্দের প্রাপ্তি সাপেক্ষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সহায়তা প্রদান করা হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *