গোয়াইনঘাটে মহিলা ইউপি সদস্যের মামলাটি পরিকল্পিতঃ জামিনের পর বললেন মুহিব

সিলেট

তানজিল হোসেন, গোয়াইনঘাটঃ

সিলেটের গোয়াইনঘাটে সংরক্ষিত এক মহিলা ইউপি সদস্যকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামিকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণের ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। একদিন পর জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে মামলার অভিযুক্ত মুহিবুর রহমান বলছেন এই ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, পরিকল্পিত ও সাজানো একটি ঘটনা।

গত ৩০ আগষ্ট (বুধবার), উপজেলার ১০ নং পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য প্রভাষী রানী দাস বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার আসামী মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনলেও ঐ দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলায় উল্লেখিত স্বাক্ষীরা বলছেন ঐ নারী ইউপি সদস্যের সাথে অভিযুক্ত মুহিবুর রহমান এর শুধুমাত্র কথা কাটাকাটি হয়েছে। ঐ সময় মারামারি কিংবা শ্লীলতাহানির মত কোন ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মেম্বার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন ৩০ আগষ্ট বুধবার সকালে গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ণানগর গ্রামে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে মহিলা সদস্য প্রভাষী রানী দাস এর বিরুদ্ধে সরকারী ভাতাভোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগে কথা কাটাকাটি হয় পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া হেলালের ভাই মুহিবুর রহমানের। পরে উপস্থিত থাকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলিম উদ্দিন সবাইকে শান্ত করে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। সমাধানের আগেই থানায় মামলা দায়ের করে বসেন ঐ নারী ইউপি সদস্য। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা প্রত্যক্ষদর্শী পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলিম উদ্দিন ও মামলার স্বাক্ষী ইউপি সদস্য বাবুল আহমেদ বলেন, ভাতার টাকা নিয়ে মুহিবুর রহমান ও প্রভাষী রাণীর মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে, কিন্তু শ্লীলতাহানির মত এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি।
মামলার স্বাক্ষী গ্রাম পুলিশ মকরব আলী বলেন, মুহিবুর রহমান ও প্রভাষী রাণীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে, মারধর কিংবা শ্লীলতাহানির মত কিছু আমার চোখে পড়েনি।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী নুরুল আমীন বলেন, এই ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। অপরদিকে ঐ মামলায় মুহিবুর রহমানের ভাতিজা ইনসাদ হোসেন রাজিবকেও আসামি করা হয়েছে। তবে ইনসাদ হোসেন রাজিব বলেন, ঘটনার দিন আমি বাড়ীতেই ছিলাম না। ঘটনাস্থলে না থেকেও আমাকে মামলার আসামী করা হয়েছে। এই ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ভাবে একটি স্বার্থান্বেষী মহল রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে ঐ মহিলাকে দিয়ে করিয়েছে। রাজিবকে আসামি করার কারণ জানতে চাইলে নারী ইউপি সদস্য প্রভাষী রাণী বলেন, বিষয়টি ভুলবশত হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১০ নং পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রভাষী রাণী দাস বয়স্ক, বিধবা ও বিভিন্ন ভাতা কার্ডের জন্য ভাতাভোগীদের কাছ থেকে ৬০০/৭০০ টাকা করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন মর্মে অভিযোগ করে টাকা ফেরত দিতে বলেন মুহিবুর রহমান। প্রভাষী রাণী টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। প্রভাষী রাণী বলেন, আমি এই টাকাগুলো ভাতার কার্ড তৈরীতে খরচ করেছি। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

নারী ইউপি সদস্য খরচের নামে যে টাকা নিয়েছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়াইনঘাট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু কাওছার বলেন, সমাজসেবা অফিসের ভাতার কাজে শুধুমাত্র ১০ টাকা মূল্যের রেভিনিউ একটি স্ট্যাম্প ব্যাতিত কোন টাকা লাগেনা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *