রাসেল আহমদ (গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি):
গোলাপগঞ্জের ভাদেশ্বর ইউনিয়নের তেরাপুর গ্রামের প্রভাবশালী একটি পরিবারের কাছে জিম্মি এলাকার মানুষ। অবৈধ ভাবে দখল করতে বার বার মিথ্যা মামলা প্রদান, নির্যাতন এবং খুনের হুমকি ধমকি দেয়াই তাদের কাজ, এমনটাই দাবী করেছেন নির্যাতিত কয়েকটি পরিবার। তাদের ভয়ে নিজ নামীও জমিতে চাষাবাদ করতে পারছেন না লন্ডন প্রবাসী একটি পরিবার। বিগত দিনে বার বার কাজের লোক ও জমির মালিক পক্ষকে প্রতিপক্ষের লোকজন লাইসেন্সকৃত দুটি বন্দুক দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাষাবাদ করতে বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছো। পরবর্তী সময়ে নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা আইনশৃঙ্গলা বাহিনীর শরনাপন্ন হলে ৩ মাসের জন্য একটি দু’নালা ও আরেকটি এক নালা বন্দুক জব্দ করা হয়। আবারো এই বন্দুক দিয়ে ভয়ভীতি পর্দশন করায় সেই বন্দুকের লাইসেন্স বাতিল করে বিজ্ঞ আদালত।
জানা যায়, নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা অতীতে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে বন্দুকের লাইসেন্স বাতিলের জন্য আবেদন করেন। অভিযোগে ভাদেশ্বর ইউপির তেরাপুর গ্রামের মৃত আপ্তাব আলীর পুত্র আব্দুছ ছামাদ ছানু ও আব্দুস সামাদ পিনু বিরুদ্ধে বন্দুক দিয়ে ভয়ভীতি, হয়রানী, খুনের হুমকি ও জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ এনে লাইসেন্স বাতিলের আবেদন করেন। প্রথমে ৩ মাসের জন্য তাদের লাইসেন্সকৃত বন্দুক দুটি জব্দ করলেও পরবর্তীতে তাদের অপকর্ম না থামায় লাইসেন্স বাতিল করা হয়।
সর্বশেষ গত ৫ অক্টোবর ভাদেশ্বর ইউনিয়নের তেরাপুর গ্রামের মৃত মখদ্দছ আলীর পুত্র খালেদ আহমদ বাদী হয়ে একই এলাকার মৃত আপ্তাব আলীর পুত্র আব্দুছ ছামাদ ছানু (৫০), আব্দুস সামাদ পিনু (৪৩), আব্দুল মালিক জানু (৬০), আব্দুল ওয়াহাব এনু(৪৬) ও আব্দুল মালিক জানুর পুত্র রিফাত তালুকদারের নাম উল্লেখ করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এব্যাপারে নির্যাতিত খালেদ আহমদ প্রতিবেদককে আমি একজন অসুস্থ রোগী মানুষ। আমি জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ভারতে গিয়েও চিকিৎসা করিয়েছি। তারপরও সুস্থ হয়নি। বাড়ীর সামনে ৬০ শতক জায়গার মালিক চাচাত ভাই লন্ডন প্রবাসী আজিজুল হক। গত ১ অক্টোবর তারা তাদের জমি চাষাবাদের উপযোগী করতে কয়েকজন শ্রমিককে কাজে লাগান। এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন ভিডিও চিত্র ধারন ও ছবি তুলে রাখেন। পরে তাদের ৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়ে বলে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যেখানে আমি নেতৃত্বে দিয়েছি তুলে ধরা হয়েছে। আমি নিজে চলতে পারি না। অসুস্থ মানুষ। তারপরও তারা বার বার আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ষযড়যন্ত্রশুলক মামলা দায়ের করে আসছে। বিগত দিনের তাদের দায়েরকৃত মামলায় মহামান্য আদালত আমাদেরকে নির্দোষ বলে খালাস দিয়েছেন। যেখানে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা আমরা নিরিহ মানুষ হিসেবে তদন্ত পূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিপক্ষ সেখানেও নারাজী দিয়েছেন। বার বার আমাদেরকে হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমাদের ৬/৭ একর জমি জোরপূর্বক তারা দখল করেছেন। আমাদের বাড়ীর সামনের পুকুরটিও তাদের দখলে। আমরা বাড়ী থেকে বের হওয়ার রাস্তাটিও তারা রাতে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে কেটে ফেলেছে। তিনি আইনের সহায়তা কামনা করেন।
এব্যাপারে সাবেক ই্উপি সদস্য আব্দুল কাদির কানন জানান, লন্ডন প্রবাসী আজিজুল হক ও মুজিবুল হক মজু আমাদের চাচাত ভাই। বাড়ীর সামনের ৬০ শতক জায়গা আমি বর্গা চাষ করেছি। আমার বয়স হওয়ায় মালিক পক্ষ শ্রমিক লাগিয়ে চাষাবাদ করতে চেয়েছিলেন। শ্রমিকরা জমিতে কাজ করায় প্রতিপক্ষ তাদেরকে ভয়ভীতি দেখায় এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ আমি, আমার চাচাত ভাই অসুস্থ খালেদ আহমদ, আবুল কালাম, আদনান আহমদ, লায়েক আহমদ ও আব্দুল ছায়াদ ছাদকে আসামী করে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। বার বার আমাদেরকে ভয়ভীতি, নির্যাতন, মেরে ফেলার হুমকিসহ নানা ভাবে হয়নারী করে আসছে। তাদের অতীতে দায়েরকৃত মামলায় আমরা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি। আমাদেরকে ফাসাতে প্রকাশ্যে তারা নিজেদের প্রোল্টি ফার্মের ক্ষতি সাধন করে মামলায় আমাদেরকে আসামী বানিয়েছে। ইতিমধ্যে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছেন, তারা তদন্ত করলে সত্য বেরিয়ে আসবে।
এব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি রফিকুল হক শ্রাবন জানান, জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধ রয়েছে। অভিযোগের বিষয়াদী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আমাদের একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন।
শেয়ার করুন