গোয়াইনঘাটে চেয়ারম্যান হেলালের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি

সিলেট

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১০ নং পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম কিবরিয়া হেলালের বিরুদ্ধে ভিজিডির চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

এ ব্যাপারে রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান বরাবরে অভিযোগ করেন ভোক্তভোগী ৪১ জন হতদরিদ্র নারী।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়- চলতি ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে দুই বছর মেয়াদে ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (ভিজিডি) উপকারভোগীদের মধ্যে ৩০ কেজি করে চাল দেয় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ কর্মসূচি গ্রামীণ দুস্থ নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বাস্তবায়িত একটি অন্যতম সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম। যা সম্পূর্ণরূপে দুস্থ পরিবার বিশেষত নারীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে। অন্যান্য সময়ের মতো এবার অনলাইনের মাধ্যমে ভিজিডির আবেদন গ্রহণ করা হয়েছিল। এতে পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নে চলতি চক্রে ৮০টি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। যার মাধ্যমে ভিজিডি কার্ডধারী উপকারভোগী নারীদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি প্যাকেটজাত খাদ্য (চাল) সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। তাদের মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এই চাল প্রদান শুরু হয়। কিন্তু ৪১ জন নারীর নামে কার্ড থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি গোপন রেখে জুন মাসের ৩০ কেজি করে মোট ২ হাজার ৪০০ কেজি চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে অভিযোগকারী নারীরা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া হেলাল কাছে গেলে তিনি বলেন, ‘তোমাদের নামে বরাদ্দ নেই।’ চেয়ারম্যানের এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগকারী নারীরা বাধ্য হয়ে বিষয়টি লিখিতভাবে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমানের কাছে  অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও ভোক্তভোগি নারীদের নামের বরাদ্দকৃত কার্ড জব্দ করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

কমিটির সদস্যরা হলেন- উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা রূপক রঞ্জন তালুকদার, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মিজ তাসলিমা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম।

এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মিজ তাসলিমা বলেন- ‘গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় তদন্তের জন্য আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন। যার নামে কার্ড বরাদ্দ হয়েছে, নীতিমালা অনুসারে তিনিই চাল পাবেন। জনপ্রতিনিধির কাছে কার্ড রাখার কোনো বিধান নেই। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া হেলাল বলেন- ‘আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন- ‘চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভোক্তভোগিদের কার্ড জব্দ করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *