গ্রামে ১২ ঘণ্টাই থাকছে না বিদ্যুৎ

জাতীয়

সারা দেশে দৈনিক ২ থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা এবং শহরে বিদ্যুৎ থাকছেনা কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত। জ্বালানি সংকট, যান্ত্রিক ত্রুটিসহ বিভিন্ন কারণে কমেছে বিদ্যুতের উৎপাদন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনীতির সক্ষমতা বিবেচনা না করে জ্বালানির আমদানি নির্ভরতাই সংকটের মূল কারণ। যা সহসাই কাটবে না।

বড় পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট ৭ সেপ্টেম্বর এবং আরেকটি ৯ তারিখে বন্ধ হয়ে যায়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জাতীয় গ্রিডে মিলছেনা কমপক্ষে ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

বড় পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রর প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করতে আরও সাতদিন সময় লাগবে। দুই নম্বরটা ২০ সাল থেকেই বন্ধ ওভার হোলিং কাজের জন্য। ১৪, ১৫, ১৬ তারিখে যদি মালটা আসে তাহলে ১৭, ১৮ তারিখের দিকে আমরা চালু করতে পারবো।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যুৎ আধা ঘণ্টা এসেও থাকে না, চলে যায়। বাসায় বিদ্যুৎ না থাকলে বাচ্চাদের পড়াশোনায় সমস্যা হয়।

বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৮ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছালেও, জ্বালানির অভাবে বন্ধ থাকছে অনেক কেন্দ্র। এতে ১৬ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা মেটানোই সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু অলস বসে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ গুণতে হচ্ছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, ‘জোর করে গ্যাস সাপ্লাইয়ের কথা আদায় করা হয়েছে কারণ একটা পাওয়ার প্ল্যান্ট করতে হবে। মেঘনা প্ল্যান্টে সামিট, রিলায়েন্স, ইউনিক তিনটা মিলে ১৮০০ মেগাওয়াট ক্যাপাসিটি কিন্তু গ্যাস নেই। গ্যাস নেই কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্র ওঠে গেছে। এটার বোঝা আমাদের সবাইকে বইতে হবে।’

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সোমবার সন্ধ্যায় সারাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিলো ১২,৫৮৪ মেগাওয়াট। লোডশেডিং ছিলো প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত। বড় অংকের বকেয়া থাকায় ভারতের আদানি থেকেও মিলছেনা সক্ষমতার পুরোটা।

আইইইএফএ প্রধান জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, ‘মাত্রা অতিরিক্তভাবে আমদানি নিরর্ভর, জীবশ্ম জ্বালানীর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। যা আমাদের উৎপাদন খরচ বাড়াচ্ছে, আমাদের রিজার্ভে প্রভাব ফেলছে। এর এ কারণেই আমরা পর্যাপ্ত জ্বালানী আমদানি করতে পারছি না। ফলে সরকারকে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।’

১৫ বছরে ১৪ বার বেড়ে ভোক্তা পর্যায়ে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রি হয় ৮ টাকা ২৫ পয়সায়। তারপরও সরকারের ভর্তুকি ৪ টাকার মত। এমন অবস্থায় সবচেয়ে দক্ষ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে জ্বালানি নিশ্চিতের তাগিদ পর্যবেক্ষকদের।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *