গ্রেপ্তার আদম তমিজী হক

জাতীয়

হক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদম তমিজী হককে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশান এলাকায় তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

আদম তমিজী হককে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, তিনি যদি মানসিক রোগী হন তাহলে তাকে রিহ্যাবে পাঠানো হবে। তিনি যদি মানসিক রোগী না হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

হারুন অর রশীদ বলেন, আমাদের ডিবির সাইবার ইউনিটে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কেন তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় এসে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এবং পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেললেন—এসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদে যদি আমাদের কাছে মনে হয় তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ তবে তাকে রিহ্যাবে পাঠাবো মানসিক চিকিৎসার জন্য। আর যদি আমাদের মনে হয় তিনি এগুলো ইনটেনশনালি করেছেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এর আগে গত ১৬ নভেম্বর র‌্যাবও আদম তমিজি হককে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালালেও তাকে গ্রেপ্তার করেনি। তখন এ বিষয়ে র‌্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছিলেন, আদম তমিজীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও তার (তমিজী) স্ত্রীর করা মামলাসহ আরও মামলা রয়েছে। তার বাসায় অভিযানের তল্লাশি পরোয়ানা ছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব কর্মকর্তারা নিয়ম মেনেই ম্যাজিস্ট্রেট ও চিকিৎসকসহ তার বাসায় অভিযানে যায়। তবে সেখানে তিনি বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটান। তিনি ছুরি নিয়ে সুইসাইড (আত্মহত্যা) করার হুমকি দেন, জানালার গ্লাস (কাচ) ভেঙে ফেলেন, এক পা বাইরে দিয়ে লাফ দেয়ার হুমকি দেন। পরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে গ্রেপ্তার করা হয়নি তাকে। তিনি একেকবার একেক কথা বলছিলেন।

এর আগে তিনি তার কারখার সব শ্রমিককে ডেকে এনে আটকে রেখেছিলেন। এরপর বাসার প্রধান ফটক ঝালাই করে দেন, যাতে কেউ বের হতে না পারে। এমনকি শ্রমিকেরা বের হতে গেলে তাদেরও আত্মহত্যার হুমকি দেন তিনি। পরে আমরা তার বাসায় গেলে শ্রমিকেরা বেরিয়ে যান। স্বাভাবিক ও সুস্থভাবে র‌্যাব তাকে আইনের আওতায় আনতে চায় বলে জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গত সেপ্টেম্বরে ফেসবুক লাইভে নিজের পাসপোর্ট পুড়িয়ে ও নিজ দল আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন আদম তমিজি হক। এরপর তার আদম হক নামের ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে জনশৃঙ্খলা পরিপন্থী, মিথ্যা, আক্রমণাত্মক তথ্য—উপাত্ত প্রচার করে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিসহ বর্তমান সরকার বিরোধী বিভিন্ন ধরনের অবমাননাকর, আপত্তিজনক, মানহানিকর, উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করেন। তার এসব বক্তব্যে জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পরে এ বিষয়ে গত ১৫ নভেম্বর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান বাদী হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নামে কটূক্তির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব থাকা আদম তমিজী হককে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *