ঘুষের টাকা ছাড়া ‘মন গলে না’ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতার

সুনামগঞ্জ

সাত বছরের বেশি সময় ধরে একই কর্মস্থলে কর্মরত আছেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। যদিও নিয়ম অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি সময় থাকতে পারেন না। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ ছাড়া তিনি কোনো কাজ করেন না। শিক্ষকদের উচ্চতর বেতনস্কেল ও নতুন এমপিওকরণের কাজে ঘুষ না দিলে মুক্তি মেলে না। তাকে ঘুষ দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাও সম্পন্ন করতে হয় বলে একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ।

তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে াবি করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তার মতে, তিনি বলির আবেদন করলেও তা কার্যকর হয়নি।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে মিজানুর রহমান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে তাহিরপুরে যোগদান করেন। অভিযোগ উঠেছে ীর্ঘনি ধরে একই কর্মস্থলে থাকার সুবাধে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর সঙ্গে বিশেষ সখ্য গড়ে তুলেছেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা। তাছাড়া শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে নৈশপ্রহরী নিয়োগ, তাদের বেতন-ভাতা প্রদান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন প্রকল্পসহ সংলিষ্ট এমন কোনো কাজ নেই যেখানে তিনি অনিয়মে জড়াননি।

অনুসন্ধানে এই শিক্ষা কর্মকর্তার অনিয়ম-দুর্নীতির খোঁজ নিতে গেলে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষক মুখ খোলেন। তাদের মধ্যে এক শিক্ষক জানিয়েছেন, শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে চাহিদামতো ঘুষের টাকা না দেওয়ার কারণে একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের সিএস ও রেজুলেশনে অদ্যাবধি স্বাক্ষর করেননি। অপর আরেকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জানান, এই শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়ে তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে। যে কারণে তিনি তার প্রতিষ্ঠানে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করছেন না। ওই কর্মকর্তা এখান থেকে বিদায় হলে তিনি তার প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করবেন। বাদাঘাট অঞ্চলের আরেক শিক্ষক বলেন, ‘শিক্ষকদের উচ্চতর বেতনস্কেল ও নতুন এমপিওকরণের কাজে ঘুষ না দিলে মুক্তি মেলে না। হয়রানির ভয়ে শিক্ষকরা এ নিয়ে কোনো উচ্চবাক্য করেন না।’

দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকা ও অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সিলেট মিররকে বলেন, ‘আমি বদলির জন্য অনেক আগেই আবেদন করেছি। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। আমার বিরুদ্ধে করা ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন।’

সুনামগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে ওই শিক্ষা কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়নি। অনিয়মের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *