ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে দেশের ১৯টি জেলার ৪৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার আয়তনের ওই ঝড়ের সঙ্গে আসা জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ১২ ফুট। এতে উপকূলীয় এলাকার অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশি। আর পানি ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার বড় অংশ ভেঙে পড়েছে। এ কারণে স্থানীয় অধিবাসীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি ও কষ্টের মধ্যে পড়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাব নিয়ে এক সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত ৩১ মে বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশে মানবিক সহায়তা নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত সংস্থা, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় উন্নয়ন সংস্থাগুলো যৌথভাবে প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত করেছে।
পানি ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এই দুই কারণে স্থানীয় মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৫ মে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাত ২৭ মে পর্যন্ত ছিল। বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল ও নোয়াখালী জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসের কারণে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়াসহ নানা ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রতিবেদনটি তৈরির দায়িত্বে থাকা সংগঠনগুলোর কো-চেয়ারম্যান কায়সার রিজভী বলেন, উপকূলীয় এলাকার জীবন, কৃষি ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা এমনিতেই লবণাক্ততার কারণে সমস্যার মধ্যে ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওই সমস্যা আরও বেড়েছে। ফলে জরুরি ভিত্তিতে সেখানে পানি ও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে হবে। আর দীর্ঘ মেয়াদে কী করা যায়, সেই কাজের পরিকল্পনা এখনই শুরু করতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত ৮ জেলার ২ লাখ ৭৭ হাজার ২২৬ হেক্টর জমির মধ্যে ৮০ হাজার ৫৯১ হেক্টর জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায়। সেখানকার প্রায় ৪৭ শতাংশ ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এর বাইরে স্থানীয়ভাবে মজুত করা ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ খাদ্য নষ্ট হয়ে গেছে। পানি ও মাটি লবণাক্ত হওয়ার কারণে মানুষ ও গবাদিপশুর খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
শেয়ার করুন