কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রামগামী একটি যাত্রীবাহী বাস নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ডাকাতদলের এক সদস্য নারী যাত্রীর পাশে বসতে চাওয়ায় তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে। এ সময় ৬ জন ডাকাত মিলে ওই নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার পর ভুক্তভোগী এ তথ্য দেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২ আগস্ট) কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। পরে বুধবার (৩ আগস্ট) ভোরে বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপারে পৌঁছালে ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী ওঠেন। তার কিছুক্ষণ পরেই যাত্রীবেশে থাকা ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে ঘুমন্ত যাত্রীদের হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করে। এরপর যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। পরে গাড়িতে থাকা এক নারী যাত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। এ সময় টানা তিন ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর নির্যাতনের পর টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া নামক স্থানে এসে বাসটির গতি থামিয়ে ডাকাত দল নেমে যায়। পরে বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ খবর পেয়ে পেয়ে মধুপুর থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছিলাম। বাসটি সিরাজগঞ্জে রাতের খাবার বিরতি দেয়। পরে বাসটিতে মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্ট থেকে যাত্রীবেশে ডাকাত ওঠে। এ সময় তাদের সবার মুখে মাস্ক পরা ছিল। এরপর তারা একত্রিত হয়ে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ সময় তাদের মধ্যে একজন আমার পাশের সিটে বসতে চাইলে আমি নিষেধ করি। তবে তিনি জোরপূর্বক বসে পড়ে গালাগালি করে। এক পর্যায়ে ডাকাতদলের ছয়জন মিলে ধর্ষণ করে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাদিকুর রহমান জানান, ভুক্তভোগীর ধর্ষণের সোয়াব টেস্ট করা হয়েছে। সেটি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগীর শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। টেস্টের রিপোর্ট পেলে ধর্ষণের বিষয়টি জানা যাবে।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন জানান, এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, টাঙ্গাইল সদর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে চলন্ত বাসে ডাকাতি করার ঘটনা স্বীকার করেছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি জানিয়েছেন, তারা ১০ জন মিলে বাস জিম্মি করে চলন্ত অবস্থায় যাত্রীদের কাছ থেকে সব কিছু ডাকাতি করেছে। এ সময় বাসে থাকা এক নারীকে তার সহযোগীরা ধর্ষণ করেছে।
শেয়ার করুন