হাদিসের বিশুদ্ধ গ্রন্থ মুসলিম শরিফের এক হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, জান্নাতের দরজার দুই পাল্লার মাঝখানের প্রশস্ততা মক্কা শরিফ থেকে বাহরাইনের হাজার অথবা মক্কা শরিফ থেকে সিরিয়ার বুশরার দূরত্বের সমান। নবী (সা.) বলেন, যার হাতে আমার প্রাণ আছে, তার কসম! জান্নাতের একটি দরজার প্রশস্ততা হচ্ছে মক্কা ও (বাহরাইনের) হাজারের মধ্যবর্তী দূরত্ব অথবা মক্কা ও (সিরিয়ার) বুশরার মধ্যবর্তী দূরত্বের সমান। বুখারী-মুসলিম)। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে মহানবী (সা.) এ বাণী দিয়েছেন।
সম্প্রতি স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে পাওয়া ছবিতেও দেখা গেছে মক্কা থেকে বুশরা এবং মক্কা থেকে হাজার একই দূরত্বে অবস্থিত অর্থাৎ আধুনিক বিজ্ঞানও মহানবী (সা.) এর বাণীকে দিনে দিনে সত্যে বলে স্বীকার করে নিচ্ছে।
মহানবী (সা.) ১৪০০ বছর আগে মাছি প্রসঙ্গে যে কথাটি বলেছিলেন, তা আমাদের আধুনিক বিজ্ঞানও মেনে নিয়েছে। বুখারী ও ইবনে মাজাহ হাদীসে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا وَقَعَ الذُّبَابُ فِي إِنَاءِ أَحَدِكُمْ فَلْيَغْمِسْهُ فَإِنَّ فِي أَحَدِ جَنَاحَيْهِ دَاءً وَفِي الْآخَرِ شِفَاءً ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ অর্থ : যদি তোমাদের কারো পাত্রে মাছি পতিত হয় সে যেন উক্ত মাছিটিকে ডুবিয়ে দেয়। কেননা তার একটি ডানায় রোগ জীবাণু রয়েছে, আর অপরটিতে রয়েছে রোগনাশক ঔষধ” (বুখারী)।
১৪০০ বছর আগে মহানবী (সা.) এই বাণীর মাধ্যমে দুনিয়ার মানুষকে জানিয়ে দিয়ে যান মাছির মধ্যে রোগ জীবাণু রয়েছে। যা আধুনিক বিজ্ঞান দুইশ’ বছর আগে স্বীকার করেছে। এ নিয়ে এখনও বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত চিকিৎসা সম্মেলনে কানাডা থেকে দু’টি গবেষণা রিপোর্ট পাঠিয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, মাছিতে এমন কোনো বস্তু রয়েছে যা জীবাণুকে ধ্বংস করে দেয়। একই বিষয়ে জার্মান ও ব্রিটেন থেকে প্রাপ্ত রিসার্চগুলো ধারাবাহিক সংগ্রহের মাধ্যমে সম্প্রতি একটি বই বেরিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, মাছি যখন কোনো খাদ্যে বসে, তখন তার জীবাণুযুক্ত ডানাটি খাদ্যে ডুবিয়ে দেয়। অথচ তার অপর ডানায় থাকে প্রতিরোধক ওষুধ। ফলে মাছিকে ওই খাবারে ডুবিয়ে দেওয়া হলে অপর ডানার জীবাণু প্রতিরোধক খাদ্যের সঙ্গে মিশে মারাত্মক জীবাণুগুলোকে ধ্বংস করে দেয় এবং সেই খাদ্য স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য অনুকূল থাকে
এ বিষয়ে কিং আব্দুল আযীয বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ওয়াজিহ বায়েশরী হাদীছটির আলোকে মাছি নিয়ে কয়েকটি পরীক্ষা চালান। জীবাণুমুক্ত কিছু পাত্রের মধ্যে কয়েকটি মাছি ধরে নিয়ে জীবাণুমুক্ত টেস্টটিউবের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখেন। তারপর নলটি একটি পানির গ্লাসে উপুড় করেন। মাছিগুলো পানিতে পতিত হওয়ার পর ওই পানি থেকে কয়েক ফোঁটা পানি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পান, সেই পানিতে অসংখ্য জীবাণু রয়েছে। তারপর জীবাণুমুক্ত একটি সূঁচ দিয়ে মাছিকে ওই পানিতেই ডুবিয়ে দেন। তারপর কয়েক ফোঁটা পানি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন, সেই পানিতে আগের মতো আর জীবাণু নেই, বরং কম। তারপর আবার ডুবিয়ে দেন। তারপর কয়েক ফোঁটা পানি নিয়ে আবার পরীক্ষা করেন। এমনিভাবে কয়েকবার পরীক্ষা করে দেখেন যে, যতবার মাছিকে ডুবিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন, ততই জীবাণু কমেছে। অর্থাৎ তিনি প্রমাণ পেলেন যে, মাছির একটি ডানায় রোগজীবাণু রয়েছে এবং অপরটিতে রোগনাশক ওষুধ রয়েছে।
সেই চৌদ্দশ বছর পূর্বে এই ক্ষুদ্র জীবাণু দেখার শক্তি মানুষের ছিল না। অথচ রাসূল (সা.) সেগুলোর দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং সে সম্পর্কে কথা বলেছেন এবং ওই বিপদজনক দিক বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক।
আল্লাহর ওহি ব্যতীত আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) দ্বীন বিষয়ে কোনো কথা বলেন না (নাজম ৩-৪)। তাঁর যবান দিয়ে কোনো মিথ্যা কথা বের হয় না। অতএব হে মানুষ! সব ছেড়ে ইসলামমুখী হও। কোরআন ও হাদিস মেনে নাও। দুনিয়া ও আখেরাতে সুখি হও।
শেয়ার করুন