সেলিম মাহবুব,ছাতকঃ
ছাতকে সাব-রেজিষ্ট্রার অনিয়মিত হওয়ায় ভুমি ক্রেতা-বিক্রেতারা পড়েছেন চরম বিপাকে। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে ভুমি সংক্রান্ত বিষয়ে আসা লোকজন বিমূখ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। সাব-রেজিষ্ট্রার কখন, কোনদিন আসবেন অফিস ষ্টাফ সহ কেউ নিদিষ্ট করে বলতে পারছে না। সরকারের জনগুরুত্বপূর্ণ এ কার্যালয়ের সাব-রেজিষ্ট্রার অনিয়মিত হওয়ার কারনে জনদুর্ভোগ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সরকারী রীতি অনুযায়ী সপ্তাহে ৫টি কার্যদিবস থাকলেও ছাতকের সাব-রেজিষ্ট্রার মাত্র দু’দিন অফিস করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কখনো-কখনো সপ্তাহে ১দিনও অফিস করে থাকেন সরকারী এ কর্মকর্তা। ফলে প্রবাসী অধ্যুশিত ছাতক সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে অনেকটা অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দলিল লেখক জানান, এর আগে সাব-রেজিষ্ট্রার হিসেবে এখানে কর্মরত যারা ছিলেন, তাদের অনেকেই অন্য উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে গেছেন। কর্মকর্তার দেয়া নির্দিষ্ট দিনে সাব-রেজিষ্ট্রার অফিস করায় জন ভোগান্তি ও অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু বতর্মান সাব-রেজিষ্ট্রার কোন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন না করলেও অর্পিত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও অনিয়মিত। ফলে দলিল দাতা-গ্রহীতাসহ ভমি সংক্রান্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকেই কোন না কোনভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারী ছাতকে সাব-রেজিষ্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন আয়শা সিদ্দীকা। যোগদানের পর থেকেই তিনি অফিসে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। তিনি যোগদান করেই ছুটিতে চলে যান প্রায় নয় মাস। প্রায় সময় ছুটিতে চলে যান সাবরেজিস্টার আয়শা সিদ্দিকা স্হানীয় সুত্রে জানা যায়। সুদুর রাজশাহী থেকে এসে সপ্তাহে টানা দু’দিন অফিস করে আবার রাজশাহীতে ফিরে যান। সপ্তাহের বাকী ৩ কার্যদিবসে তিনি থাকেন অনুপস্থিত। কার্যদিবসের এ দু’দিন তিনি জেলা পরিষদের ডাকবাংলায় অবস্থান করেন। তবে সপ্তাহের কোন ২দিন তিনি অফিসে আসবেন তাও কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারে না। ফলে ভুমি সংক্রান্ত বিষয়ে সাব-রেজিষ্ট্রার আসা লোকজন পড়েন অনাকাংখিত ভোগান্তিতে। সার-রেজিষ্ট্রার অফিসের দায়িত্বশীল এক স্টাফ জানান, সাব-রেজিষ্ট্রার মেডাম রাজশাহী থেকে বিমান যোগে এসে তিনি ছাতকে অফিস করে থাকেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দলিল লেখক জানান, সাব-রেজিষ্ট্রারের অনুপস্থিতির কারনে চলতি সপ্তাহে অন্তত শাতাধিত দলিল রেজিষ্ট্রারের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব দলিলের দাতারা সন্তানদের বিদেশে পাঠানো, বিয়ে, ব্যবসা, ঋন পরিশোধ সহ বিভিন্ন জরুরী কারনে ভুমি বিক্রি করে থাকেন। পক্ষান্তরে দলিল গ্রহীতারা নিজের নুতন সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টির জন্য ভুমি ক্রয় করেন। কিন্ত সাব-রেজিষ্ট্রার অনিয়মিত হওয়ার কারনে দাতা-গ্রহীতা উভয়ই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দক্ষিন খুরমার রহিম আলী, চেচানের নুরুজ্জামান ও ইসলামপুরের আব্দুস ছাত্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, টানা তিনদিন ভুমি রেজিষ্ট্রি কাজে এসে তারা ফিরে যেতে হয়েছে। দলিল লেখকরা তাদের কাজ সমাপ্ত করলেও সাব-রেজিষ্ট্রার না থাকায় তারা ভুমি রেজিষ্ট্রি করতে পারছেন না। এ ব্যাপারে সাব-রেজিষ্টার আয়শা সিদ্দীকার সাথে মুটোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শেয়ার করুন