সেলিম মাহবুব, ছাতকঃ
ছাতকে বিলে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ পাথর শ্রমিক আবুল হোসেনের কংকালসার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের ২৩ দিন পর মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গোয়া বিলের পাড়ে একটি ঝুপ থেকে তার কংকালসার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পাথর শ্রমিক আবুল হোসেন (৫৫) ইসলামপুর ইউনিয়নের সৈদাবাদ গ্রামের মৃত আব্দুল মনাফের পুত্র। স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে গোয়া বিলের পাড়ে গরু ছাড়াতে গিয়ে মন্তাজনগর গ্রামের আমির উদ্দিনের পুত্র সালেহ আহমদ একটি কংকালসার লাশ দেখে গ্রামের লোকজনদের খবর দেয়। খবর পেয়ে নিখোঁজ আবুল হোসেনের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে কংকালসার লাশ দেখে শনাক্ত করেন। শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে মাথার খুলি ছিল বিচ্ছিন্ন। তবে মেরুদন্ডসহ বুক ও হাত পা’ হাড়ের সাথে কর্দমাক্ত একটি গেঞ্জি ও লুঙ্গি পাওয়া গেছে। কংকালের পাশে লুঙ্গি ও গেঞ্জি দেখে আবুল হোসেনের লাশ বলে তার পরিবারের লোকজন শনাক্ত করেছে। বিকেলে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ মর্গে প্রেরন করেন। আবুল হোসেনের পরিবারের লোকজন জানান, প্রতিদিনই ভোর রাতে জাল দিয়ে গোয়া বিলের পাড় সংলগ্ন উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরতে যান আবুল হোসেন। বিল এবং বিলের আশপাশে গোপনে মাছ ধরার অপরাধে প্রায়ই বিলের পাহারাদাররা তাকে গালিগালাজ সহ হুমকি-ধামকী দিতো। কিন্তু কিছুতেই তাকে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে পারেনি তারা। এভাবেই অন্যান্যদিনের মতো ২১ অক্টোবর ভোরেও গোয়া বিল সংলগ্ন উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরতে যান আবুল হোসেন। কিন্তু সেদিন আর সে বাড়ি ফিরে আসেনি। আবুল হোসেন মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদী হয়ে উঠে এলাকার লোকজন। তারা বিষয়টি মৌখিকভাবে থানা পুলিশকেও অবহিত করে। অনেক খোঁজাখুজি করেও তার কোন সন্ধান না পেয়ে ঘটনার ৮দিন পর ২ নভেম্বর আবুল হোসেনের স্ত্রী সবতুন বেগম বাদী হয়ে বিলের পাহারাদার সৈদাবাদ গ্রামের ইন্তাজ আলীর পুত্র শুকুর আলী, মন্তাজনগর গ্রামের আব্দুল আজিজের পুত্র মনির উদ্দিন ও সফিক উদ্দিন সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ আমল গ্রহনকারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা(নং-৪৮৮/২০২২) দায়ের করেন। মাননীয় আদালত ৭ নভেম্বরের মধ্যে সবতুন বেগমের অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করার জন্য ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেয়া হয়। অভিযোগে বলা হয়, গোয়া বিলের পাশে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরার অপরাধে আসামীরা আবুল হোসেনের উপর আক্রোশান্বিত হয়ে উঠে। ২১ অক্টোবর ভোরে বিলের পাহারাদাররা আবুল হোসেনের বাড়িতে এসে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর থেকেই আবুল হোসেন নিখোঁজ হয়। তাকে পরিকল্পিতিভাবে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করেছে আসামীরা। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।##
শেয়ার করুন