“ছোট বেলার স্মৃতি”-খালেদ আহমদ

কবিতা

মনে পড়ে আজ ছোট্ট বেলায়
কত করেছি খেলা,
ধূলোর সাথে গড়াগড়ি করে
কত কেটেছে বেলা।

নারিকেল পাতার বাঁশি তৈরি
এ পাতায় হাতঘড়ি,
সুপারি গাছের খোলে চড়ে
যেথাম কুটুমবাড়ি।

খেলা ঘরে প্রতিদিন
বিয়ে হতো যত,
আমি হতাম বর প্রতিদিন
সেজে বরের মতো।

কাদা মাটিতে কত রকমের
বাসন তৈরী করে,
সেই গুলোকে সাজিয়ে রাখতাম
মোদের খেলা ঘরে।

সেই পাত্রে রান্না হতো
রকমারি তরকারি,
এই সব দেখে ভাবিজান এসে
করতেন যে মশকারি।

নারিকেল পাতার চশমা চোখে
হাতে নিয়ে বেত,
মাস্টার সেজে শিক্ষা দিতাম
ছাত্র ছিল কচু ক্ষেত।

মা এসে বলতেন আমায়
একদিন তুমিই হবে মাস্টার!
কচুর মতো প্রহার করো না
এটাই মোর আবদার।

শিক্ষার্থীদের দিকে চাইলেই মনে হয়
মায়ের সেই উপদেশ,
তাই তো আমি সবার সাথে
মিশে যাই সহজে বেশ।

আঘাতে আঘাতে কত কচুর
পাতা করেছি নষ্ট,
সে দিনের স্মৃতি মনে হলে আজো
মনে পাই বড় কষ্ট।

বাড়িতে যেই দিন মেহমান আসতেন
বিস্কুট নিয়ে আসতেন সাথে,
নজর থাকতো ‘খালি প্যাকেটে’
কবে আসবে হাতে।

অনেক দিনের প্যাকেট জমা করে
দোকান বসানো হতো,
এই সব দেখে সেজভাই এসে
লজ্জা দিতেন কত!

মাটির জিনিষ কিনে ভাই
দিতেন সত্যিকারের টাকা,
মনে সেই দিন ভাবতাম আমি
ভাই মনে হয় বোকা।

আদর করে যে টাকা দিতেন
বুঝিনাই সেই দিন,
সারা জীবন থেকেই গেল
আমার কাছে ঋণ।

কাঁঠাল পাতাই টাকা ছিল
বাঁশের পাতাই ইলিশ,
খড়কুটো দিয়ে তৈরি করতাম
খেলা ঘরের বালিশ।

(সংক্ষেপিত)
রচনাকাল১৯/১১/২০১৫
রচনার স্থান, নানা বাড়ি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *