জনগণ নয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের গভীর সম্পর্ক: রিজভী

জাতীয়

রাজনীতিতে ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের জনগণ বাক স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, দু’দিন আগে পত্রিকায় দেখেছি, ‘ডামি সরকারে’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ উগান্ডায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে নাকি ভারতের সম্পর্ক গভীর থেকে আরও গভীর হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা আংশিক সত্য। সম্পর্ক গভীর হয়েছে, তবে সেটি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গভীর করতে গিয়ে এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ ও রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপে বাংলাদেশের জনগণ হারিয়েছে গণতন্ত্র, বাক ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং ভোটের অধিকার।

৭ জানুয়ারির ভোট জনগণ প্রত্যাখান করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক অনুনয়-বিনয় আর স্বৈরাচারী উগ্র প্রতিমূর্তি ধারণ করেও ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারেনি। কারণ জনগণ আগেই টের পেয়েছিল ভোটকেন্দ্রে লোক সমাগম দেখিয়ে সন্ধ্যা বেলায় পূর্ব নির্ধারিত ব্যক্তিদেরকে সংসদ সদস্য হিসেবে নাম ঘোষণা করা হবে। সেটি ভোটের দিন অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণিত হয়েছে।

রিজভী বলেন, কারাহেফাজতে ও রিমান্ডে নির্যাতন পৃথিবীর সকল জালিমশাহীর রেকর্ডকে ভঙ্গ করেছে। কারও হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, কারও হাত ও পায়ের নখ তুলে ফেলা হয়েছে, কারও চোখের আলো নিভে গেছে পুলিশের ছোঁড়া শট-গানের গুলিতে।

তিনি বলেন, এখন অনেকে আদালত থেকে জামিন পেলেও কারামুক্তি মিলছে না। জামিনের কাগজ নিয়ে কারাফটক থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারও নতুন মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আওয়ামী পুলিশ প্রশাসন বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী দলগুলোর নেতাকর্মীদের জীবন নিয়ে খেলছে। অবৈধ সরকার যেন নিজেদের টিকিয়ে রাখতে রাষ্ট্রযন্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর। জামিনে মুক্তি পেলেও জেলগেটে অপেক্ষমাণ গোয়েন্দা সংস্থার লোকদেরকে টাকা না দিলে তাদের মুক্তি মিলছে না। অসংখ্য গরিব নেতাকর্মী জেলগেটের টাকা না দেওয়ার কারণে কারাগারেই ধুকে ধুকে জীবন কাটাচ্ছে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির বিরুদ্ধে প্রতিশোধের হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলেছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এখন আওয়ামী সুরক্ষাবাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আমি জেলগেটে অনাচার এবং টাকার বিনিময়ে মুক্তির নিশ্চয়তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *