সিলেটে টানা দুই দিনের বৃষ্টিপাতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে নগরের বেশিরভাগ এলাকা। একইসাথে পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি)। বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরাসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি অপরিকল্পিত উন্নয়নকাজ ও পানি নিষ্কাশনের পথ সংস্কার না করায় অল্প বৃষ্টিতে পানি জমছে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি একাডেমিক ভবন, চেতনা একাত্তর, টং দোকান, হ্যান্ডবল গ্রাউন্ড, আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসের ইউসি থেকে লাইব্রেরি ভবনের সম্মুখসহ বিভিন্ন স্থান প্লাবিত হয়েছে। কোথাও হাঁটু পানি দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলাচলের প্রধান পথ পানিতে ডুবে যাওয়ায় ভোগান্তি হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান বলেন, অল্প বৃষ্টিতে পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে ক্যাম্পাস। এতে অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েছেন। সুন্দরভাবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলে এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল, কোয়ার্টার ও গবেষণা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজ হয়েছে। এসব নির্মিত ভবনের ফলে ক্যাম্পাসের নিচু জায়গায় ভরাট হয়েছে। ফলে ক্যাম্পাসে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। এছাড়া ক্যাম্পাসের পানি নিষ্কাশনের যে পথ রয়েছে সেটিও সরু হয়ে গেছে। সংস্কার না হওয়ায় এসব পথ দিয়ে পানির গতি কমে গেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবেশ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটি মাথায় নিয়ে উন্নয়নের পরিকল্পনা করতে হয়। এটা সবার জন্য উদ্বেগের কারণ যে এ বছর অনেকবার ক্যাম্পাস পানিতে জলাবদ্ধ হয়েছে। পূর্বে বি বিল্ডিং ও চেতনা একাত্তরের মধ্যখানের পানি নিষ্কাশনের পথ দিয়ে একটি বড় নিচু জায়গায় পানি জমা হতো। সেখানে একাডেমিক ভবন ডি এর বর্ধিতাংশ নির্মাণ হওয়ায় সেখানকার পানি ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। তাই দ্রুত যেসব জায়গায় সংস্কার দরকার তা করে পানির গতিবেগ বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে যাতে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা না হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শহিদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ক্যাম্পাসে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতোমধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। মূলত ক্যাম্পাসে নিচু জায়গা ভরাট হওয়া ও পানি নিষ্কাশনের পথ সরু হওয়ায় দ্রুত এ পানি চলে যেতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নয়াবাজার থেকে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ হয়ে প্রথম ছাত্রী হলের পাশ দিয়ে চেঙ্গার খাল দিয়ে ক্যাম্পাসের পানি যাওয়ার পথ রয়েছে। এ পথ সংস্কার করলে খুব দ্রুত গতিতে পানি চলে গেলে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকাজ এ জলাবদ্ধতায় প্রভাব ফেলছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই প্রভাব ফেলছে। উন্নয়নকাজের ফলে নিচু জায়গা ভরাট হওয়ায় পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। তাই উন্নয়নকাজের পাশাপাশি সমান্তরালভাবে পানি নিষ্কাশনের এ বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে।
শেয়ার করুন