বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী কোটি কোটি মানুষের সংগঠন। এ সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত জনগণকে রাজপথে অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ না দিয়ে পুলিশ যেভাবে উস্কানি ও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে, তা মূলত পরিকল্পিত সংঘাত সৃষ্টির প্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) দলটির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হল জনগণের নিরাপত্তা বিধান করা। তারা তা না করে জনগণকে হয়রানি করছে। সংবিধানে নাগরিকদের সভা-সমাবেশ করার অধিকার দেয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ সভা-সমাবেশে বাধা দিয়ে প্রতিনিয়ত সংবিধান অবজ্ঞা করে চলেছে। গতকাল পুলিশের হামলায় শতাধিক লোক আহত হয়েছে এবং এ পর্যন্ত পুলিশ সারা দেশে তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে, ঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে জনগণের মৌলিক, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মিছিলের ওপর হামলা, গ্রেফতার এবং কোথাও কোথাও গুলি করেছে। নোয়াখালীতে পুলিশ মিছিলের ওপর সরাসরি গুলি চালিয়ে ২০ জন নেতাকর্মীকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। একজনের চোখে গুলি লাগায় তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করতে হয়েছে। পঞ্চগড়ে পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছে। বহু জায়গায় পুলিশ মিছিলকারীদের ওপর আক্রমন করেছে। এমনকি মিছিল শেষ হওয়ার পথে যানবাহনে তল্লাশি চালিয়ে জনগণকে হয়রানি করেছে। রাতে বিভিন্ন জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে হানা দিয়ে অনেককে গ্রেফতার করেছে। অনেকের বাড়ি-ঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। কোনো কোনো বাড়িতে পুরুষ মানুষ না পেয়ে নারী ও শিশুদের মধ্যে ভীতিকর পরিবেশ তৈরী করেছে।
তিনি বলেন, জামায়াত শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিয়মতান্ত্রিকতায় বিশ্বাসী। শান্তিপূর্ণভাবে জামায়াত তার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চায়। কিন্তু পুলিশ ক্রমেই জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। এমন ব্যক্তিদের নামে মামলা করা হচ্ছে, যারা অনেক আগেই মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ধরনের মিথ্যাচারের মাধ্যমে নীতি-নৈতিকতা, পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ব পালনের বিশ্বস্ততাকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এ ধরনের সংবিধান বিরোধী ভূমিকা জনগণকে আস্থাহীনতার দিকে নিয়ে যাবে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশে শান্তি এবং শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। তাই আমরা পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে পূর্ণ পেশাদারিত্বের সাথে দলীয় আনুগত্য পরিহার করে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করার ও জনগণকে হয়রানি না করার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২৪ ডিসেম্বর জামায়াত ঘোষিত দেশব্যাপী গণমিছিল বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলা এবং মহানগরীতে পালিত হয়েছে। এ কর্মসূচিতে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। এ কর্মসূচি সফল করায় দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ভবিষ্যতে ঘোষিত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করে তোলার জন্য দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি