রিংকু দেবনাথ
মাধবপুর (হবিগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
জন্মেছিলেন সুস্থ স্বাভাবিক। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় এলোমেলো হয়ে যায় ফারুক মিয়ার জীবন। শিশুবয়সেই আগুনে পুড়ে এক হাতের কব্জি হারান তিনি। তবুও থেমে থাকেননি। কখনো হাত পাতেননি কারও কাছে। জীবনযুদ্ধে হার না মানা সংগ্রামী যুবক ফারুক মিয়া হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বানেশ্বর গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে। ভাড়ায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, নিকটাত্মীয় বলতে দুই বোন ছাড়া আর কেউই নেই ফারুকের। নেই ভিটেবাড়িও। শিশুকালে কুপির আগুনে পুড়ে এক হাতের কব্জি হারায় সে। ১৩ বছর বয়সে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় হারায় তার গর্ভধারিণী মা ও বাবাকে।তাদের মৃত্যুর পর দিশাহারা হয়ে পড়ে ফারুক। ওলোট-পালোট করে দেয় তার জীবনের সব হিসাব-নিকাশ। সংসার চালানোর দায়িত্ব এসে পড়ে ফারুকের কাঁধে। বাবা-মার মৃত্যুর শোক কাটতে না কাটতেই নেমে পড়েন কাজে। সংসারের হাল ধরতে কিশোর বয়সেই রিকশার প্যাডেলে পা রাখতে হয় ফারুককে।
তার সাথে কথা হলে, কেমন আছেন জিজ্ঞেস করতেই অশ্রু ভেজা চোখে ফারুক বলেন, ভালো আছি। আব্বা-আম্মা মরার পরে সংসারের হাল ধরতে ভাড়ায় প্যাডেল রিকশা চালানি শুরু করি। এহনো আরেকজনের ব্যাটারি ওয়ালা রিকশা চালাইয়া প্রতিদিন রিকশার ভাড়া দিয়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা রুজি করি । এই টেকা দিয়া সংসারটা কোনো রকমে চলছে। সমাজে ত অনেক ধনী মানুষ আছে তারা কেউ যদি আমারে একটা রিকশা দিত। তাইলে বেশি টাকা রুজি কইরা তারার লাগি দোয়া করতাম। প্রতিবন্ধী চালক দেখে যাত্রীরা উঠতে চায় কিনা? এমন প্রশ্নে ফারুক বলেন, ‘অনেকে প্রতিবন্ধী দেখে উঠতে চায় না। ভাবে চালাই তে পারমু কিনা। আবার অনেকে আমারে খুঁইজা রিকশায় ওঠে। শারীরিক প্রতিবন্ধী ফারুকের বিষয়ে কথা হলে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন বলেন, তিনি আবেদন করলে বরাদ্দ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।