জুড়ীতে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন

মৌলভীবাজার

জানুয়ারির প্রথম দিকে এ বছর শীত তেমন ছিল না, কিন্তু কয়েকদিন থেকে তীব্র শীতের প্রকোপ শুরু হয়েছে। হাকালুকি হাওর আর চা-বাগানঘেঁষা উপজেলা জুড়ীর মানুষ শীতে ভোগান্তিতে পড়েছেন। তীব্র শীতের কারণে বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন। দেখা দিয়েছে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ।

ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জড়সড় হয়ে পড়েছেন হাওর ও চা-বাগানের মানুষ। গত বুধবার থেকে সূর্যের মুখ দেখা না যাওয়ায় শীতের তীব্রতা যেন বেড়েছে কয়েকগুণ। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের লোকজন পড়েছেন বিপাকে। পাশাপাশি বিপাকে রয়েছেন হাকালুকি হাওরে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অতিথি পাখিগুলো। শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে পাখিগুলো হাওর ছেড়ে বিভিন্ন গাছপালায় আশ্রয় নিয়েছে।
হাকালুকি হাওরের বিলের মাছ ব্যবসায়ী অজিত দাস বলেন, কয়েকদিন থেকে তীব্র শীত থাকায় হাকালুকি হাওরে পাখি দেখা যাচ্ছে না। পাখিগুলো উজানে চলে গেছে। শীত কমলে আবার হাওরে আসবে।

শীতের কারণে জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। রিকশা-ভ্যান চালক, দিনমজুর, কৃষিশ্রমিকরা পথে ও মাঠে নেমে সামান্য কাজ করেই শীতে কাবু হয়ে পড়ছেন। অন্যান্য বছর বিভিন্ন ব্যক্তি, সামাজিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ করা হলেও এ বছর তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি। সরকারি ভাবে বিগত বছরগুলোতে তিন-চার ধাপে কম্বল বিতরণ করা হলেও এ বছর মাত্র এক ধাপে সামান্য সংখ্যক কম্বল বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন ব্যক্তি,সামাজিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ করা হলেও এ বছর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ৭৫টি কম্বল বিতরণের তথ্য পাওয়া গেছে। এ এসবি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কিছু কম্বল বিতরণেরও খবর পাওয়া গেছে।

হাকালুকি হাওর পাড়ের কৃষক বশির মিয়া জানান, এখন বোরো ধানের চারা রোপণের সময়। ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে অনেক মানুষ হাওরে ধান রোপণ করতে পারছেন না।

জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মরজিৎ সিংহ বলেন, শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে অনেকেই হাসপাতালে আসছেন। তাদের মধ্যে বয়স্ক ও শিশুর সংখ্যা বেশি।

উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো মিজানুর রহমান বলেন, প্রথম ধাপে ২৪শত কম্বল এসেছিল ৬টি ইউনিয়নে বিতরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬শত কম্বল এসেছে এগুলো বিতরণ করা হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *