জুড়ীতে হামলা, ভাঙচুর, লুট

মৌলভীবাজার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার খবর পেয়ে জুড়ীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাসাবাড়ি ও অফিসে হামলা করেছে  জনতা।

সোমবার রাতে জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যানের কিশোর রায় চৌধুরীর সরকারি বাসভবনে হামলা করে বাহিরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে সরকারি গাড়িসহ বাসার আববাবপত্র পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।

এ সময় চেয়ারম্যানের পাশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার( ভূমি)এর বাসার সামনেও আগুন লাগানো হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং কে পরিবার নিয়ে বাসার ছাদে অবস্থান নিতে দেখা যায়।

রাতে জুড়ী থানায় হামলা করার জন্য বিক্ষোভকারীরা গেলে সেখানে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতা তাদের বাধা দেন। পরে তারা ফিরে এসে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের জাঙ্গিরাই গ্রামের বাড়ি,যুবলীগের সভাপতি মামুনুর রশীদ সাজু ও ছাত্রলীগ নেতা সাজেদের ভবানীপুর গ্রামের বাসা,উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেলের ভোগতেরা গ্রামের বাড়ি, পূর্ব জুড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদিরের বাড়ি, যুবলীগ নেতা সাইফুর রহমানের গরের গাও গ্রামের বাড়ি সহ  প্রায় অর্ধ শতাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাসায় হামলা চালানো হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জমসেদ আহমদের টিসিবির গোদামে হামলা করে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যায় দুর্ড়িত্তরা।
এ দিকে রাতে নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার খবরে কয়েকটি এলাকায় রাত জেগে পাহারা দিয়েছে এলাকাবাসী।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা,সাধারন সম্পাদক শেখরুল ইসলামের  ভোগতেরা গ্রামের বাড়ি, জেলা পরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বেলাল হোসাইনের  জায়ফর নগরের গ্রামের বাড়িতে দুবৃত্তরা হামলা করবে এ রকম তথ্য ছড়িয়ে পড়লে এসব গ্রামের মসজিদে মাইকিং করে সবাইকে একত্রিত ভাবে হামলা মোকাবেলা করতে বলা হয়।এতে দুই গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক মানুষ রাত জেগে গ্রামের নেতাকর্মীদের জন্য পাহারা দেন।

অপর দিকে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বাসা ও  জুড়ী থানায় হামলার কারনে বাসা ও থানা ছেড়ে চলে গেছেন কর্মকর্তারা ও পুলিশ।

রাতেই সরকারি বাসা ত্যাগ করে নিরাপদ আশ্রয় চলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা আক্তার। সোমবার রাত নয়টার দিকে জুড়ী থানার গেইটে তালা দিয়ে সব পুলিশ নিয়ে চলে যান ওসি মেহেদী হাসান।

উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মামুনুর রশীদ সাজু বলেন, আমি  রাজনীতি করি কিন্তুু  কোন মানুষের ক্ষতি করিনি।কোন দিন রাজনীতি থেকে এক পয়সাও  আয় করিনিঅ অথচ আমার বাড়িতে হামলা করে সব কিছু লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জুড়ী থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান,আমরা নিরাপত্তার জন্য নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করছি।

এদিকে, উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী মাছুম রেজার সভাপতিত্বে  উপজেলা বিএনপির এক জরুরী সভায় নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈর শাসনের অবসান হয়েছে। নেতাকর্মীদের অনুরোধ করছি, যারাই বিভিন্ন ভাবে আমাদের ক্ষতি করেছে তাদের ক্ষমা করে দিতে। কারও বাড়ি কিংবা দোকানপাটে কোন ধরনের হামলা যাতে না হয় সে ব্যাপারে ও কঠোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *