বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিলেটে নির্বাচনি জনসভায় সিটি করপোরেশনের টানা দুই বারের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সাংগঠনিক দক্ষতার কথা একমাত্র স্মরণ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক।
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেট সরকারী আলীয়া মাদরাসা মাঠে নির্বাচনি জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে জেবুন্নেছা হক তাঁর বক্তব্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই বারের মেয়র ও আওয়ামী লীগে কেন্দ্রীয় সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে স্মরণ করেন।বক্তব্যে জেবুন্নেছা হক বলেন, ‘এই শহরে আমি কামরানকে খুব মিস করি। বদর উদ্দিন কামরান আমার প্রিয় মানুষ। সে সাংগঠনিকভাবে সে খুবই দক্ষ ছিলো। কিন্তু সে আজ নেই।’
ইতিপূর্বে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেটের সব জনসভায়ই পাশে বসতেন কামরান। কিন্তু এবার তিনি নেই! ২০২০ সালের ১৫ জুন ভোরে ভয়াল করোনা কেড়ে নেয় তাঁর প্রাণ।২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর। এ দিন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সিলেটে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন শেখ হাসিনা। জনসভায় সেদিন গান গেয়ে নেতাকর্মীদের নজর কেড়েছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কামরান।
২০১৮ সালের পর গতকাল বুধবার আবার সিলেটের কোনো জনসভায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে জড়ো হন বিভাগের চার জেলার ১৯টি সংসদীয় আসনের নেতাকর্মীরা। কিন্তু এ জসনভায় একমাত্র জেবুন্নেছা ছাড়া সবাই যেন বেমালুম ভুলে গেলেন কামরানকে।
একনজরে কামরান :
বদরউদ্দিন আহমেদ কামরান ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় ১৯৭৩ সালে তিনি প্রথমবার সিলেট পৌরসভার ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে হন সিলেট পৌরসভার চেয়ারম্যান। ২০০২ সালে সিলেট পৌরসভা সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর মেয়র মনোনীত হন।
২০০৩ সালে সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে জিতে মেয়র পদ ধরে রাখেন তিনি। ২০০৭- ০৮ সালে সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আরো অনেক রাজনীতিবিদের মতো কামরানকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে সময় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা কামরান কারাগারে থেকে নির্বাচন করেও বিপুল ভোটে জয়ী হন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে হেরে গিয়ে মেয়র পদ হারান কামরান। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি লড়েছিলেন, কিন্তু জয়ী হতে পারেননি।
১৯৮৯ সাল থেকে সিলেট শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০২ সালে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হন কামরান। সেই দায়িত্ব তিনি সামলেছেন প্রায় দেড় যুগ। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদ পাওয়া কামরান মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত একই পদে ছিলেন।
শেয়ার করুন