জৈন্তাপুরের শওকত মেম্বারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

সিলেট

সিলেটের জৈন্তাপুরে ইউপি সদস্য শওকত আলীর বিরুদ্ধে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি আর) কর্মসূচির কাজে অনিয়মের অভিযোগ জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার জৈন্তাপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাগণের পক্ষে সাবেক ছাত্রনেতা বদরুল ইসলাম গত ১০ অক্টোবর এই অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের বরাদ্দকৃত ভিত্রিখেল গ্রামীণ রাস্তা হতে হুসেন আহমদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ১ লক্ষ টাকা ও লামনীগ্রাম ভিত্রিখেল দৌলা মিয়ার কবরস্থানের রাস্তা অসমাপ্ত অংশ ১ লক্ষ ৫০  হাজার টাকা সিসি ডালাই কাজ চলমান থাকা অবস্থায় সরজমিনে পরিদর্শন করে অনিয়মের অভিযোগ দেখে এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা নিবাহী অফিসার বরাবর কাজের অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে চলতি বছরের ১০ আগস্ট অভিযোগ করা হয়।

জৈন্তাপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শওকত আলীর এই দুটি কাজে অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে বিষয়টি অবগত করা হয়। উপজেলা নিবাহী অফিসার প্রকল্প কর্মকর্তাকে সরজমিনে পরিদর্শন করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। পিআইও গত ১১ আগস্ট সরেজমিন পরিদর্শন করে কাজের অনিয়ম পান। তিনি অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে ইউপি সদস্য শওকত আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন না করে কাজের বিল প্রদান করেন যা জনস্বার্থ বিরোধী ও স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে সরকারের চলমান উন্নয়ন নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

নিজের ইউনিয়ন কাজের অনিয়ম হওয়ায় এমপির ইমেজ মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শওকত আলীর বিরুদ্ধে অতীতেও বিভিন্ন ধরণের সরকারি কাজে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

সরকারের কৃষি অফিস কর্তৃক বাস্তবায়িত ভর্তুকী বাজেটে কৃষি যন্ত্রপাতি ও সার বীজ সহ যাবতীয় সুবিধা তার আপন ভাই ও বিভিন্ন আত্মীয় স্বজন ও নিরীহ গরীব কৃষকদের নামে বরাদ্দ নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করেন। লামনীগ্রামের বাসিন্দা গরীব কৃষক ধনাই মিয়ার নামে ১ লক্ষ টাকা দামের জমি চাষের মেশিন তাকে না দিয়ে শওকত আলী সেটা অন্যত্র বিক্রি করে দেন। সরকারি বরাদ্ধকৃত প্রতিটি কাজ অনিয়ম করে অর্থ আত্মসাত করেছেন।

চলতি অর্থবছরে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার কাবিখা (২য় পর্যায়) অর্থের বিশেষ বরাদ্দের প্রকল্পে ভিত্রিখেল কৈন্যাখাই জামে মসজিদ হতে সোবহান মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুঃননির্মাণ করার জন্য সরকারি বরাদ্ধকৃত ৭.১০০ মেঃ টন গম তখনকার বাজার মূল্য  ৩,১৯,৫০০ টাকা কাজ না করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সহ তিনি টাকা আত্মসাৎ করেন। সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন সুনাম রক্ষার স্বার্থে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক পিআইও এবং ইউপি সদস্য শওকত আলীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণে দাবী জানানো হয়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আমি প্রথমে কাজ পরিদর্শন শেষে সন্তুষ্ঠ না হয়ে পুনরায় কাজের নির্দেশ দেই। পরে কাজ সম্পন্নের পর তাকে বিল দেয়া হয়েছে।

ইউপি সদস্য শওকত আলীও তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রকল্প অনুযায়ী তিনি কাজ শতভাগ সম্পন্ন করেছেন। এবং সংশ্লিষ্টরা সরেজমিন পরিদর্শন করে বিল দিয়েছেন। এখানে কোন অনিয়ম হয়নি। আর কৃষক ধনাই মিয়ার নামে জমি চাষের মেশিন তাকে না দিয়ে সেটা অন্যত্র বিক্রি করে দেয়া বিষয়ে শওকত আলী বলেন, চাষের মেশিন কৃষি অফিস যাচাই-বাছাই করে দিয়ে থাকে। এটা বিক্রির অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভূয়া।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *