আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুকের নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি।
আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই ঘোষণা দেন।
তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির প্রথম সহ-সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা মামুনুর রশিদ (চাকসু মামুন)। গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) তিনি এরই মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে তীব্র অসন্তোষ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতে, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এই আসনে বিএনপির নিজস্ব কোনো প্রার্থী নেই। প্রতিবারই জোটের স্বার্থে আসনটি শরিক দলগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনেও এই আসনে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুককে মনোনয়ন দেওয়া হলে দলীয় নির্দেশে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন মামুনুর রশিদ (চাকসু মামুন)।
নেতাকর্মীরা জানান, দীর্ঘদিনের সেই রাজনৈতিক আক্ষেপ ঘোঁচাতে এবার তৃণমূল অত্যন্ত তৎপর ছিল। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কানাইঘাট উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে চাকসু মামুনের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তাদের প্রত্যাশা ছিল, এবার অন্তত দল নিজেদের নেতাকে মূল্যায়ন করবে।
মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দ্রের ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় মামুনুর রশিদ (চাকসু মামুন) গণমাধ্যমকে জানান, তিনি এবার কোনোভাবেই মাঠ ছাড়বেন না। তিনি বলেন, আমি নির্বাচন করবো এটা চূড়ান্ত। মনোনয়নপত্র কিনেছি এবং আজই তা জমা দেবো। আমি দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য কাজ করছি। এখন আর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
তিনি আরও জানান, জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের দাবির মুখেই তিনি নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সিলেট-৫ আসনে জমিয়ত নেতার পাশাপাশি বিএনপির এই হেভিওয়েট নেতার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণায় পাল্টে গেছে নির্বাচনী সমীকরণ। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চাকসু মামুন নির্বাচনে অনড় থাকলে এই আসনে জোটের প্রার্থীকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। এখন সবার নজর জেলা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।
প্রধান সম্পাদকঃ সারওয়ার খান
সম্পাদকঃ জাকের খান (রুবেল)
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫