জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। (৯ আগষ্ট) মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার আহবায়ক আবু জাফর এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক প্রনব জ্যোতি পাল এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মনজুর আহমদ, হারুন মিয়া, ইউসুফ আলী, ইমদাদুল হক, শুক্কুর আলী,শহীদ মিয়া জাবেদ আহমদ মুন্না আহমদ, ইমরান আহমদ প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি, বিপিসির লোকসান, ভর্তুকি দিতে সরকারের অক্ষমতা এবং তেল পাচারের দোহাই দিয়ে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও শ্রমজীবীদের উপর নিপীড়নের সামিল। আর্ন্তজাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম এখন উন্নতির দিকে। ক্রড অয়েলর যে দাম এখন ৯৫ ডলার এ বছর শেষে তা ৮০ ডলারের নিচে নামতে পারে বলে জ্বালানী বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। সরকার গত ১২ বছরে অলস বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ৮৬ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা প্রদান করেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ১০ টি শীর্ষ বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানীকে ৪৪ হাজার৬৪০ কোটি টাকা দিয়েছে বলে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। শুধু গত মার্চ মাস পর্যন্ত ৯ মাসে পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এভাবে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদেরকে ভর্তুকি দিয়ে বাড়তি দামের বোঝা জনগণের উপর চাপানো হচ্ছে। তেলের দামের প্রভাবে কৃষি ও শিল্প উৎপাদন, খাদ্য পণ্য, পরিবহণ খরচ, বিদ্যুৎ, পানি সহ সকল খাতে খরচ বহুগুণ বেড়ে যাবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্য ও খাদ্যপণ্যের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিতে শ্রমজীবীসহ দেশের মানুষের এমনিতেই দিশেহারা অবস্থা। এর উপর জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি শ্রমজীবীদের জীবন যাপনকে আরো কঠিন করে তুলবে। কোন খাতের শ্রমিকের আয় বাড়েনি কিন্ত ব্যয় প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশে জাতীয় ন্যুনতম মজুরি কাঠামো ঘোষনা ও গার্মেন্টস, হোটেলসহ বিভিন্ন সেক্টরে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন ও রেশন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি।
নেতৃবৃন্দ জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার, জাতীয় ন্যুনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষনা, বিভিন্ন সেক্টরে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন, শ্রমজীবীসহ সকল সাধারন মানুষের জন্য রেশন ব্যবস্থা চালু ব্যাটারি চালিত যানবাহনের হয়রানি বন্ধ করা, নির্মাণ শ্রমিকদের বাজার মূল্যের সাথে সঙ্গতি রেখে মজুরি নির্ধারণ করার আহ্বান জানান।