জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করছে সিলেট জেলা ছাত্রলীগ। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের এই ছাত্র সংগঠন।
দায়িত্ব পাওয়ার বছরের মধ্যেই ঝিমিয়ে পড়া বিভিন্ন ইউনিট কমিটিগুলোকে অনুমোদন দিয়ে নতুন নেতৃত্ব বের করে আনছেন তারা। একইভাবে মহানগর ছাত্রলীগও ২৭ ওয়ার্ডের কমিটি করতে উদ্যোগ নিয়েছে।
২০২১ সালের ১২ অক্টোবর সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। নাজমুল-রাহেল নেতৃত্বে আসার বছরের মধ্যেই তারা সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগ নেন।
এই সময়ের মধ্যে ৩০টি ইউনিট কমিটির ৪টির অনুমোদন দিয়েছেন। অন্য ইউনিটগুলোতেও কমিটি দিতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
অথচ ক্ষমতাসীন দলের অন্য অঙ্গসংগঠনগুলো মেয়াদ পর হওয়ার পরও ইউনিট কমিটি দূরে থাকায় তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। এমনকি বিগত দিনে নেতৃত্বে থাকা নেতারাও ছাত্রলীগকে শক্তিশালী করার পরিবর্তে কেবল বিতর্কে জড়িয়েছেন।
সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ নেতৃত্বে আসার পর ইউনিট কমিটিগুলো অনুমোদন দিতে কাজ শুরু করেন। উপজেলা পর্যায়ে ছাত্রলীগের পদ-প্রত্যাশীদের বায়োডাটা আহ্বান করেন।
দায়িত্ব পাওয়ার ১০ মাসের মাথায় দুই উপজেলা ও একটি কলেজ কমিটির অনুমোদন দেন। আর এক বছরের মাথায় এসে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে সবগুলো ইউনিট কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়ে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ বাংলানিউজকে বলেন, জেলা ছাত্রলীগের অধীনে থাকা সব উপজেলা ও কলেজে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করতে এবং আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিটি গঠন করার কাজ চলছে। জেলার অধীনে ৩০টি ইউনিট কমিটির মধ্যে ১৩টি উপজেলা ৫টি পৌরসভা ও ১২টি কলেজ রয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই সবগুলো কমিটি সম্পন্ন করা হবে। এর বাইরেও আরো নতুন কিছু কলেজ এমপিওভুক্ত হয়েছে, সেগুলোও আওতায় আনতে কথাবার্তা চলছে। এছাড়া জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, এর আগে গেল ৩০ জুলাই ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রলীগের ৪১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একই দিনে ১৫ বছর পর ২৫ সদস্যের বালাগঞ্জ উপজেলা শাখা ও ১৬ সদস্যের কলেজ ছাত্রলীগের ১ বছর মেয়াদী কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা ছাত্রলীগ। সর্বশেষ ২০০২ সালে বালাগঞ্জ ছাত্রলীগের কমিটি গঠন হয়। এরপর আর সম্মেলন হয়নি। শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এই কমিটি ৫ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় ছিল। সর্বশেষ ২০১৭ সালে এই উপজেলায় কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরপর আর সম্মেলন হয়নি, বলে সংগঠন সূত্রে জানা গেছে। একইভাবে মহানগর ছাত্রলীগও ৩টি ইউনিট কমিটি সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে রাহেল সিরাজ বলেন, ২০১৭ সালে গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়া হয়েছিল। ওখানে কমিটি ২টি কমিটি ছিল। কিন্তু কোনো কার্যক্রম ছিল না। যে কারণে প্রকৃত ছাত্রদের দিয়ে নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছে। নেতৃত্বে আসা ছাত্রলীগ নেতারা শুক্রবার রাতেই বিজয় মিছিল করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায়।
শুক্রবার অনুমোদন দেওয়া সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ। নবগঠিত এই কমিটিতে সুফিয়ান আহমদকে সভাপতি ও রাজীব আহমদকে (গোলাম রেজওয়ান) সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে রাখা হয়েছে ২১ জনকে, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নয় জন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নয় জন, প্রচার ও উপ-প্রচার সম্পাদক তিন জন, দপ্তর ও উপ-দপ্তর সম্পাদক তিন জন, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং উপ-গ্রন্থনা প্রকাশনা সম্পাদক তিন জন, সাংস্কৃতিক ও উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিন জন, শিক্ষা ও পাঠচক্র এবং উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক তিন জন, সহ-সম্পাদক সাত জন এবং আট জনকে সদস্য পদে রাখা হয়েছে।
এদিকে, সিলেটে ক্ষমতাসীন দলের মূল সংগঠন আওয়ামী লীগও ছাত্রলীগের কার্যক্রমগুলো পর্যবেক্ষণে রেখেছে জানিয়ে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ছাত্রলীগের নতুন কমিটি কার্যক্রম আমাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। ইউনিট কমিটিগুলো করার বিষয়ে সবার সঙ্গে সমন্বয় করা প্রয়োজন। তাতে কমিটিগুলো আরো সমৃদ্ধ হবে।
শেয়ার করুন