তিন ঘন্টা আগেই শুরু বিএনপির গণসমাবেশ

রাজনীতি

নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘণ্টা আগেই বরিশাল বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে গণসমাবেশের সূচনা হয়। গণসমাবেশের জন্য নির্ধারিত সময় ছিল দুপুর ২টায়। তবে লোকসমাগম বেশি হওয়ায় তাঁদের মনোযোগ ধরে রাখতেই নির্ধারিত সময়ের আগেই সমাবেশের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।

সমাবেশে উপস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বরিশাল বিভাগীয় নেতারা জানিয়েছেন, সমাবেশ নির্ধারিত সময়ের আগে শুরু হলেও প্রধান অতিথি ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা নির্ধারিত সময়েই মঞ্চে আসবেন। সমাবেশে যোগ দিতে গতকাল শুক্রবার রাতেই বরিশালে পৌঁছেছেন প্রধান অতিথি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যান লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে। আশপাশের এক থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকা লোকারণ্য হয়ে পড়ায় সাড়ে ১১টার দিকে গণসমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বরগুনা জেলা বিএনপির এক নেতা প্রথম বক্তা হিসেবে বক্তৃতা দেন। এরপরে বিভিন্ন জেলার নেতারা পর্যায়ক্রমে বক্তৃতা করছেন। সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে আজ শনিবার সকাল থেকেই মঞ্চে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জাসাস) সদস্যরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশ করতে থাকেন।

সকাল ১০টার মধ্যেই সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যান উপচে চারদিকের এক কিলোমিটারের মধ্যে থাকা সব সড়কই লোকে ভরে ওঠে। নগরের বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলি থেকে একের পর এক মিছিল যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের দিকে। নগরীতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে সব প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে দলে দলে যোগ দিচ্ছেন দলটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। তাঁদের মিছিল-স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যান (পুরোনো বেলস পার্ক)। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকায় দূরদূরান্তের নেতা-কর্মীদের একসঙ্গে পেয়ে আনন্দে মেতে উঠেছেন দক্ষিণের নেতা-কর্মীরা। সকাল থেকে তাঁরা সমাবেশস্থল স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে তাঁরা স্লোগান দিচ্ছেন।

আজ শনিবার ভোরে বরিশাল মহানগরীর রুপাতলী, সদর রোড, লঞ্চঘাট, নথুল্লাবাদসহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মিছিল নিয়ে আসতে দেখা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রধান নগরীর সড়কগুলোতে খণ্ড খণ্ড মিছিলের চাপ বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে স্লোগানের প্রতিধ্বনিও। এ ছাড়া সকাল থেকেই বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যান (বেলস পার্ক) মাঠে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মানুষ নিজ এলাকার নেতাদের নিয়ে স্লোগান দিয়ে মুখরিত করে তুলেছেন সমাবেশস্থল। মাঝে মাঝে দেশাত্মবোধক গানে মাতিয়ে রাখছেন, বাজনার তালে তালে কেউ কেউ নেচে উঠছেন।

পটুয়াখালী থেকে আসা জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌফিক আলী খান কবির বলেন, ‘দূর-দূরান্তের নেতা-কর্মীরা অনেক খুশি। অনেক বাধা পেরিয়ে আমরা এসেছি এই মাঠে। সরকার গণপরিবহন বন্ধ করে আমাদের সমাবেশ সফল করতে দিতে চাইছিল না। কিন্তু আজ কানায় কানায় পূর্ণ আমাদের সমাবেশস্থল।’ পাথরঘাটা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান জলিল সরকার বলেন, ‘রাস্তায় লোকজনকে বাধা দিচ্ছে, এ জন্য জামা খুলে মাথায় বেঁধে এই সমাবেশস্থলে এসেছি। সমাবেশ সফল করেই যাব ইনশাআল্লাহ।’

পটুয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নু বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা সবাই আনন্দিত। এই সরকারের অত্যাচার-নিপীড়ন থেকে মুক্তি চায় সবাই। কেন্দ্রীয় নেতাদের পেয়ে সবাই অনেক খুশি। আজ এই সমাবেশ বরিশাল বিভাগে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বরিশালের সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তার পরও খোলা মাঠে থেকে সমাবেশ সফল করতে আনন্দে মেতে উঠেছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও গণসমাবেশ বাস্তবায়ন মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্যসচিব আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ বলেন, ‘সব বাধা উপেক্ষা করে জেলা-উপজেলার নেতা-কর্মীরা এসে এরই মধ্যে বেলস পার্ক জনারণ্যে পরিণত হয়েছে। সব নেতা-কর্মীর মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে।’

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *