তিন মাসের মাথায় আবারও দাম বাড়ছে বিদ্যুতের

জাতীয়

তিন মাসের মাথায় আবারও বাড়ছে বিদ্যুতের দাম। বিতরণকারী সংস্থাগুলোর দাবির প্রেক্ষিতে আসন্ন বাজেটের আগেই ইউনিট প্রতি পাঁচ ভাগ দাম বাড়তে পারে। মূলত, দাম সমন্বয় করতেই দাম বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন।

তথ্যমতে, গত মাসের শেষের দিকে জ্বালানিসংকটে বন্ধ হয়ে যায় রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। একইসঙ্গে গরম আর সেচের মৌসুম হওয়ায় হঠাৎ বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সারাদেশ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে। রাজধানীতেই লোডশেডিং হয় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। আর কোনো কোনো জেলায় দিনের অর্ধেক সময় থাকতো না বিদ্যুৎ। এতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) জানায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। টানা চারদিন আড়াই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়। মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলেও প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে সারাদেশে। তবে, সেদিন সন্ধ্যায় বৃষ্টি শুরু হলে বিদ্যুতের চাহিদা কমতে থাকে। একইসঙ্গে রামপালেও উৎপাদন শুরু হলে বুধবার বিকেল পর্যন্ত কোনো লোডশেডিং করতে হয়নি।

তবে, কয়লা নিয়ে শঙ্কা থাকায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধের শঙ্কা এখনও কাটেনি। তাই বিদ্যুতের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন।

এদিকে, বিদ্যুতের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যেই দাম বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার। পাইকার ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করতেই এ সিদ্ধান্ত বলে জানান মোহাম্মদ হোসেন।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য ২০ শতাংশ বাড়ছে। বিপরীতে খুচরা মূল্য ১৫ শতাংশ বাড়ছে। ফলে বিতরণ কোম্পানিগুলো ৫ শতাংশ কমে আছে। এ অবস্থায় তারা চাইবে সমন্বয় করতে দাম ৫ শতাংশ বাড়াতে।

অন্যদিকে, চলমান গ্যাস সংকটের মধ্যেই আবাসিক খাতে মিটারবিহীন গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। তাদের দাবি, তারা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেনি, শুধু মাসিক গ্যাস ব্যবহারের ইউনিট পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, গ্যাসের ইউনিট পুনর্নির্ধারণ করা হলে ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে গ্যাসের দাম। এই প্রস্তাব কার্যকর হলে আবাসিক খাতে এক চুলার বিল ৩৮৯ টাকা বেড়ে হবে ১ হাজার ৩৭৯ টাকা এবং দুই চুলার বিল ৫১২ টাকা বেড়ে হবে ১ হাজার ৫৯২ টাকা।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বৃহস্পতিবার (১৮ মে) রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সব ভর্তুকি তুলে দিতে চায় সরকার। আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জ্বালানির দাম নির্ধারণ করা হবে। এজন্য এগুলোর দাম নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *