দলীয় সাংগঠনিক কাজ তো বটেই, একেবারে প্রান্তিক এলাকার কর্মীর অসুস্থতার খবরে ছুটে যান হাসপাতালে। বিয়ে-শাদি, সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান সব কিছুতেই তাঁর সরব উপস্থিতি। এজন্যই তো তাকে বলা হয় ২৪ ঘন্টার রাজনীতিবিদ। তিনি শফিকুর রহমান চৌধুরী। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তৃণমূলের কর্মী থেকে যিনি হয়েছেন মন্ত্রী।আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ৪র্থ মেয়াদে মন্ত্রিসভায় শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রবাস কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে শপথ পাঠ করেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রবীন এই আওয়ামী লীগ নেতা। এর মধ্যদিয়ে দশ বছরের অপেক্ষার অবসান হয় তার।নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের তিনি ৭৮ হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ১৯৭৮ সালে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের টাওয়ার হ্যামলেটস কমিউনিটি ডেভেলাপমেন্ট ট্রাস্টের সেক্রেটারি, বেথনাল গ্রীন সিটি চ্যালেঞ্জের ডিরেক্টর ও বিভিন্ন সাব কমিটির কো-চেয়ারম্যান, বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্টের সভাপতি, প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব, লন্ডনে বৈশাখী মেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ও অন্যতম উদ্যোক্তা ছাড়াও বিভিন্ন ন্যায্য অধিকার আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন শফিকুর রহমান চৌধুরী।
যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন অবস্থায় বিলাতের মায়া ত্যাগ করে সিলেটের রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হন ২০০৮ সাল থেকে।২০০৯ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা এম ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন।
স্থানীয় রাজনীতিতে অভাবনীয় এই সাফল্যে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা তাকে মূল্যায়ন করে সরাসরি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করেন।এরপর জাতীয় সংকটকালে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে সিলেট-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি শফিক চৌধুরী। এই দুই নির্বাচনে আসনটি জোটের অনুকূলে ছেড়ে দেওয়া হয়। সাংসদ না থাকলেও দীর্ঘ ১০ বছর এলাকাছাড়া হননি তিনি। এলাকার জনগণের সুখে-দুঃখে, দুর্যোগকালে বন্ধুর মতো পাশে থেকেছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থাভাজন হয়ে কাজ করে গেছেন।
দলীয় নেতাকর্মী থেকে সাধারণ মানুষ; সবার কাছে শফিক চৌধুরীর দরজা সব শ্রেণিপেশার মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকে। এজন্য তিনি ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার আপার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। আমাকে দেশের জন্য বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ তৈরিকরে দেওয়ার জন্য। নিশ্চয়ই দেশের কল্যাণে এবং এলাকার মানুষের ভালোর জন্য কাজ করব। আমি সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’
শেয়ার করুন