ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তার পরিবার অনুসারীদের নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের প্রতি শোক জানাতে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আশুরার দিনে রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে তাজিয়া মিছিল শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) ১০ই মুহররমকে কেন্দ্র করে আগের দিন সোমবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে আসেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষরা। ইমাম হোসাইনের জন্য দোয়া ও তার প্রতীকী রওজা জিয়ারত করেন ভক্ত ও অনুরাগীরা। তারা জানান, শ্রদ্ধা থেকে আসেন অন্যান্য ধর্মের মানুষও।
আশুরার দিন তাজিয়া মিছিল হলেও রাতভর চলে বিভিন্ন আয়োজন। সব প্রস্তুতি শেষে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় শুরু হয় তাজিয়া মিছিল। হোসেনি দালান ইমামবাড়ার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মির্জা মো. নাকী (আসলাম) বলেন, রাতভর বিভিন্ন ইবাদত চলবে।
তাজিয়া মিছিলটি হোসেনি দালান থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ধানমন্ডির জিগাতলায়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য থাকবে বলেও জানান বাস্তবায়ন কমিটি।
সকাল ১০ টায় তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে মোহাম্মদপুর, মিরপুর ও ফরাশগঞ্জ থেকে অনেক শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন জড়ো হন। এতে হোসেনি দালানের ভেতর এবং বাইরে দাঁড়ানোর মত জায়গা ছিল না। সবাই এসে এ মিছিলে অংশ নেন।
কারবালার ‘শোকাবহ এবং হৃদয় বিদারক ঘটনাবহুল’ এই দিনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে মুসলিম বিশ্বে এ দিনটি গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়।
আশুরা উপলক্ষে মঙ্গলবার সরকারি ছুটি। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা বিশেষ প্রবন্ধ ও নিবন্ধ প্রকাশ করে। এছাড়া, বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও এবং স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলও এ দিনের তাৎপর্য তুলে ধরতে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে।
এদিকে,পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
তাজিয়া মিছিলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসন কিছু বিধিনিষেধ অরোপ করেছে। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
শেয়ার করুন